বাংলাদেশে একমাত্র শিক্ষার জন্য কেন মেগা

বাংলাদেশে একমাত্র  শিক্ষার জন্য কেন মেগা
বাংলাদেশে একমাত্র  শিক্ষার জন্য কেন মেগা

 শিক্ষা আইনের সবলতা ও দুর্বলতা ব্যাখ্যা করবেন?

মনজুর আহমদ: প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের পরিধি ও উদ্দেশ্য সীমিত। ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ও আলোচিত এবং শিক্ষানীতিতে উল্লেখিত শিক্ষার বড় চ্যালেঞ্জগুলোর ব্যাপারে বিশেষ বক্তব্য খসড়া আইনে রাখা হয়নি। অন্তত তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা বলা যায়, যা আইনের খসড়ায় অবহেলিত—এক. শিক্ষা অধিকারের স্বীকৃতি ঘোষণা করে এ-সংক্রান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত করা। দুই. বিকেন্দ্রায়িত ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহির ধরন, পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষার সুশাসন ও সুব্যবস্থাপনাকে সমুন্নত রাখা এবং তিন. শিক্ষা অর্থায়নের নীতি ও পর্যাপ্ততার মানদণ্ড স্থির করা, যাতে মানসম্মত, সমতাভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার লক্ষ্য অর্জিত হয়।

এসব পদক্ষেপের অগ্রগতির তত্ত্বাবধান ও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শিক্ষানীতিতে এক বিধিবদ্ধ স্থায়ী শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ করা হয়। বিষয়টি খসড়া আইনে যুক্ত হয়নি বলেই শোনা যায়। জরুরি চ্যালেঞ্জসমূহ আইনে যেমন বিবেচিত হয়নি, তেমনি যেসব বিষয় উন্নয়ন, গবেষণা ও পর্যালোচনার ব্যাপার—যেমন শিক্ষাক্রমের প্রকৃতি, শিক্ষকের পেশাগত প্রস্তুতি ও মান উন্নয়ন, শিক্ষার্থী মূল্যায়ন—সেসবের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রচলনকে আইনে ঢুকিয়ে ভবিষ্যতের উন্নয়ন ও সংস্কার ব্যাহত করার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এককথায় সামগ্রিক শিক্ষা আইনের অভাব শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের প্রধান অন্তরায় নয় এবং ছিল না। শিক্ষানীতির বহুমাত্রিক লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কৌশল যথার্থ অনুধাবন করে এসবের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পর্যায়ে নেতৃত্বের অভাবে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়নি। এ কারণে ১২ বছরেও একটি সহায়ক আইনি কাঠামো তৈরি হয়নি এবং আইনে কী থাকবে বা থাকবে না, তা নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছানো যায়নি। এ কারণেই শিক্ষার জন্য একটা সামগ্রিক খাত উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা যায়নি। ২০২০ সালে এ ব্যাপারে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা-ও এখন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে