আর্থিক খাতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না: অর্থ উপদেষ্টা

আর্থিক খাতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না: অর্থ উপদেষ্টা
আর্থিক খাতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না: অর্থ উপদেষ্টা

প্রথম সময় প্রতিবেদক 

আর্থিক খাতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না: অর্থ উপদেষ্টা

আর্থিক খাতে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, স্বচ্ছতা না থাকলে অনেকেই পার পেয়ে যায়। তবে একটা ম্যাসেজ দেওয়ার চেষ্টা করব।

শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ১১তম আইসিএসবি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইসিএবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালে কর্পোরেট গভর্নেন্স, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় কর্মকাণ্ড পরিচালনার ভিত্তিতে ১৪টি শ্রেণিতে ৪১ কম্পানিকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত কম্পানিগুলোর মধ্যে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান এবং আইসিএসবি-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এম নুরুল আলম।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিগত সময়ে অনেক অপরাধ হয়েছে। আমরা কিছুদিনের জন্য এসেছি। সব কাজ করতে পারব না, তবে আমরা নিশ্চিত করব যাতে সবাই শাস্তি পায়। আমরা একটা মেসেজ দিতে চেষ্টা করছি, অন্যায় করে কেউ কিন্তু পার পাবেন না।

তবে সেটা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আসবেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অর্থনীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশের পুরো সুশাসন নিয়েই আমরা চিন্তিত। সরকারি কোনো অর্থই যেন অপচয় না হয়। অনেক অর্থের অপচয় হয়েছে, জবাবদিহিতা ছিল না।

গত সময়ে অনেকেই অনেক কিছু করেছে। সবাইকে হিসাব দিতে হবে। পার্থিব পরকালে দুই জায়গাই হিসাব দিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় রোল-প্লে করে বেসরকারি খাত। কম্পানির ওপর যদি আস্থা না থাকে তাহলে বিদেশি বিনিয়োগের তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। এক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা অনেক। 

তিনি বলেন, ব্যক্তিগত হোক আর দেশের সম্পদ হোক অপচয় বা দুর্নীতি করা যাবে না। এরই মধ্যে যেসব দুর্নীতি হয়েছে সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। এতদিন কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ তার বক্তব্যে বলেন, টেকসই পুঁজিবাজারের জন্য তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোকে অবশ্যই কর্পোরেট গভর্নেন্স কোড মেনে চলার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এ অনুষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কর্পোরেট ব্যবস্থাপনায় সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আইসিএসবি ব্যবসায়িক খাতে চাটার্ড সেক্রেটারিদের ক্ষমতা এবং সৃজনশীলতা বাড়ানোর জন্য অক্লান্তভাবে কাজ করছে। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, নতুন বাংলাদেশ স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ বাংলাদেশ। আপনারা যদি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেন তাহলে এগিয়ে যাবে।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, এ অ্যাওয়ার্ড কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক হতে এবং কর্পোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি মানদণ্ড তৈরিতে সহায়তা করছে। যেখানেই অনিয়ম দেখব আমরা সোচ্চার হব। আমরা চমৎকার বাংলাদেশ প্রত্যাশা করি। যেখানেই অনিয়ম দেখবেন সেখানেই সোচ্চার হবেন। আমাদের চোখ হবে, দুদকের চোখ।

আইসিএসবি-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান এম নুরুল আলম বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের কর্পোরেট সেক্টরে সুশাসন উৎসাহিত করা এবং একে সমুন্নত রাখা।
 
আইসিএসবি-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম মুশফিকুর রহমান আশা প্রকাশ করেন, এ পুরস্কার প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্পোরেট ক্ষেত্রে উত্তরোত্তর অগ্রগতি অর্জনে অনুপ্রাণিত করবে