রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: পুরো রাশিয়া জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার, অধিকৃত অঞ্চলে সামরিক শাসনের নির্দেশ দিলেন পুতিন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: পুরো রাশিয়া জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার, অধিকৃত অঞ্চলে সামরিক শাসনের নির্দেশ দিলেন পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাদের দখলকৃত ক্রাইমিয়াসহ রাশিয়া জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন।
পাশাপাশি ইউক্রেনের আরো যে চারটি অঞ্চল রাশিয়া সম্প্রতি দখল করে নিয়েছে সেসব এলাকায় সামরিক শাসন জারি করা হয়েছে।
মি. পুতিন আঞ্চলিক গভর্নরদের আরো বেশি ক্ষমতা দিয়েছেন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, লোকজন সরিয়ে নেয়া এবং চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হতে পারে।
এসব নির্দেশ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসন থেকে রুশ-সমর্থিত প্রশাসন পালিয়ে যেতে শুরু করার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন এসব সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।
আরও পড়তে পারেন:
রুশ নিরাপত্তা পরিষদের সাথে বুধবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকের সময় মি. পুতিন এবিষয়ে এক ডিক্রি জারি করেন।
এই ঘোষণা অনুযায়ী, ইউক্রেনের চারটি রুশ অধিকৃত অঞ্চলে এই সামরিক আইন জারি হচ্ছে। এগুলো হলো লুহানস্ক, যেটি পুরোপুরিভাবে রাশিয়ার দখলে, এবং আরও তিনটি ইউক্রেনিয়ান ওব্লাস্ট, যেগুলো রাশিয়া আংশিকভাবে দখল করে আছে। এগুলো হলো দনিয়েৎস্ক, জাপোরিসা, এবং খেরসন।
তবে এসব অঞ্চলে আগে থেকেই এক ধরনের সেনা শাসন জারি ছিল।
বিবিসি মনিটরিংয়ের রুশ বিভাগ জানাচ্ছে, মি. পুতিন ঐ ডিক্রিতে যে আদেশ দিয়েছেন, তাতে ঐ অঞ্চলগুলো নিরাপত্তা জোরদার করা হবে এবং পরিবহন, যোগাযোগ ও জ্বালানি কেন্দ্রগুলো একটি "বিশেষ প্রশাসন"-এর হাতে থাকবে।
লড়াইয়ের মুখে স্থানীয় বাসিন্দাদের "নিরাপদ অঞ্চলে" সরিয়ে নেয়া হবে। এবং ঐ অঞ্চলগুলির ভেতরে সার্বিকভাবে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
তবে সামরিক আইন জারির যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেটা রাশিয়ার সংসদে অনুমোদিত হতে হবে।
মস্কো থেকে বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, মি. পুতিনের নতুন ডিক্রির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো ইউক্রেন ছাড়াও বাদবাকি রাশিয়ায় নিরাপত্তা জোরদার।
এই আদেশে তিনটি অতিরিক্ত স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরোপ করা হয়েছে।
সর্বাধিক নিরাপত্তা প্রযোজ্য হচ্ছে রুশ-অধিকৃত ক্রাইমিয়া এবং ইউক্রেনের সীমান্তের কাছাকাছি অন্যান্য রুশ অঞ্চল, যেমন বেলগোরোদ, কুরস্ক এবং ক্রাসনোদার।
এখানে অধিকতর নিরাপত্তা থাকবে, প্রয়োজনে মানুষকে সারিয়ে নেয়া হবে, এবং চলাচলের ওপর কিছু বিধিনিষেধ থাকবে।
আঞ্চলিক প্রশাসনগুলোর হাতে আরও বেশি ক্ষমতা দেয়া হবে যাতে এসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা তারা নিশ্চিত করতে পারে, টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স বাহিনী গড়ে তুলতে পারে এবং যুদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য অর্থনীতিকে 'চাঙ্গা' করতে পারে।
মি. পুতিনের সামরিক শাসনের পরবর্তী স্তরটি মস্কো, এবং তার আশেপাশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য।
এখানকার আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের কাছেও একই রকম, কিন্তু কম কঠোর, বিধিনিষেধ চালু করার ক্ষমতা থাকছে।
আর এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার সবচেয়ে নীচের স্তরে রয়েছে অন্যান্য অঞ্চল, যেমন সাইবেরিয়া, দূর প্রাচ্য এবং সেন্ট পিটার্সবার্গসহ উত্তরাঞ্চল।
কিন্তু এসব ব্যবস্থা বাস্তবে কতটা কঠোর হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।