মিউনিখে পরিবেশ বিষয়ক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, মানুষের অস্তিত্ব সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

শনিবার জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে ‘দ্য আনঅ্যাভয়েডবল মাস্টার রিস্ক? অ্যাড্রেসিং ক্লাইমেট ওভারশ্যুট’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

প্যানেল আলোচনায় কোস্টারিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং জলবায়ু ওভারশুট কমিশনের কমিশনার, কার্লোস আলভারাডো কুয়েসাদা, পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার এবং ইউরোপীয় সবুজ চুক্তির জন্য ইউরোপীয় কমিশনের নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট মারোস শেফকোভিচ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, যদি ২০২৫ সালের মধ্যে নিঃসরণ শীর্ষে পৌঁছায়, ২০৩০ সালের মধ্যে অর্ধেক হয়ে যায় এবং ২০৫০ সালের মধ্যে আমরা ‘নেট জিরো’ অর্জন করতে পারি, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব এখনো এড়ানো যাবে এবং আমরা তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করতে পারব। তবে এর জন্য দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, অতিক্রমণ এবং ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে ইতোমধ্যেই যে বিপর্যয়কর বাস্তবতা চলছে তা আরও খারাপ করে তুলবে এবং আইপিসিসি স্পষ্টভাবে বলেছে যে অনেক ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে না।

সাবের চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। যা জাতীয় শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করছে। তিনি বাংলাদেশের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে খরা বৃদ্ধির দিকে ইঙ্গিত করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইতোমধ্যেই আরও ঘন ঘন এবং চরম আবহাওয়াগত ঘটনা ঘটছে, যা লোকজনকে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ হওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৩৩ লাখ বাংলাদেশি (জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের পুরো জনসংখ্যার সমান) জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উচ্ছেদ হবে, যা এই উচ্ছেদকে দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের এক নম্বর চালক শক্তি করে তুলবে।

পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নত দেশগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে সহায়তা করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। আমাদের কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণ এবং সৌর বিকিরণ পরিবর্তনের মতো অ-পরীক্ষিত প্রযুক্তির দিকে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয় এবং এর পরিবর্তে আমাদের প্রশমন, প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধান, বনায়ন ইত্যাদি কাজের ওপর গুরুত্বারোপ করা উচিত