ঘটলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যাবে, ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে

ঘটলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যাবে, ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে
ঘটলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যাবে, ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে

বাংলাদেশে    এমন দু-একটা অঘটন ঘটলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যাবে, ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে

সেই কিশোরকে গতকাল ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকা, ২৭ জুলাইছবি: প্রথম আলো

ঢাকা কলেজের এক ছাত্রের (১৭ বছর) রিমান্ড প্রশ্নে এক শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, সে যদি শিশু হয়, তাকে (রিমান্ডে) নেবেন কেন? প্রয়োজন হলে তাকে তার মা-বাবার হেফাজতে দিয়ে দেন। তার ক্ষেত্রে শিশু আইন যেন অনুসরণ করা হয়। হাইকোর্ট আরও বলেন, এমন দু-একটা অঘটন ঘটলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যাবে, ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে।

বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এক রিট দাখিলের সময় রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।

ঢাকা কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার-রিমান্ড বিষয়ে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার–এ প্রকাশিত ছবি ও তথ্য যুক্ত করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। রিটটি দাখিলের সময় শুনানিতে আদালত এসব কথা বলেন। আগামীকাল সোমবার রিটের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছে রিট আবেদনকারীপক্ষ।

রিটটি দাখিল করার সময় আইনজীবী শাহদীন মালিকের উদ্দেশে আদালত বলেন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল কিছু অগ্রগতির কথা বলেছেন। মূল বিষয়টি হচ্ছে, সে শিশু ও তার সুরক্ষা। তার ক্ষেত্রে শিশু আইন যেন অনুসরণ করা হয়।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না

আদালত বলেন, সে যদি শিশু হয়, তাকে (রিমান্ডে) নেবেন কেন? প্রয়োজন হলে তাকে তার মা-বাবার হেফাজতে দিয়ে দেন। তখন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট আদালতে তাঁরা জামিন ও হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারেন। তবে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না, নিশ্চিত করছি।’

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আদালত বলেন, এত বড় ধ্বংসযজ্ঞ হয়ে গেছে। এ রকম দু-একটা অঘটন ঘটলে বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যাবে। ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে। তাকে ধরেছেন, তা শুদ্ধ করার জন্য আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখতেই হবে, বিষয়টি যেন এভাবে না হয়। সম্ভব হলে আজই তাকে তার মা-বাবার কাছে দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, ওনারা (রিট আবেদনকারী) দরখাস্ত দিতে পারেন। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না ও তার ক্ষেত্রে শিশু আইন অনুসরণ করা হবে। তিনি বলেন, এই ঘটনা সাধারণীকরণ করা যাবে না। এটি নজির হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

রিট আবেদনকারী আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আইন অনুসারে শিশুর বয়স প্রমাণের দায়িত্ব হচ্ছে গ্রেপ্তারকারী কর্তৃপক্ষের। যাকে আটক করা হয়েছে, তার নয়। জনস্বার্থে রিটটি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আদালত বলেন, আইনে যেহেতু বলা আছে, গ্রেপ্তারকারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব শিশুর বয়স নিরূপণ করার। একপর্যায়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, শিশু আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিশু হিসেবে যদি আবেদন করা হয়, সংশ্লিষ্ট আদালত তা যথাযথভাবে বিবেচনা করবেন। আদালত বলেন, ‘আপনি মা-বাবাকে ডেকে নিয়ে দরখাস্ত দিতে বলেন। বাবা ঢাকাতেই থাকেন। ওসিকে বলতে পারেন।’

আদালতে শাহদীন মালিকের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মনজুর আলম ও মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদের সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়েম মুরাদ।

পরে আইনজীবী এম মনজুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, রিটটি আগামীকাল সোমবার আদালতের কার্যতালিকায় আসবে