অভিযোগ উঠলে আইনজীবীদেরও বিচার হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল

অভিযোগ উঠলে আইনজীবীদেরও বিচার হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল
অভিযোগ উঠলে আইনজীবীদেরও বিচার হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল
নিজস্ব প্রতিবেদক

অভিযোগ উঠলে আইনজীবীদেরও বিচার হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল

বিচারঙ্গনে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তারও বিচার হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘কোনো আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে আমরা কী না করেছি? যদি অভিযোগ আসে তারও বিচার হবে। সে বিচার বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ করবে।’ গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি পদাধিকার বলে আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বার কাউন্সিলেরও চেয়ারম্যান।  দায়িত্ব নিয়েই প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি ‘প্রাথমিক অনুসন্ধান’ কমিটি গঠন করে দেন। হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (সার্বিক) মো. আবদুর রহমান এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার (অর্থ ও উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমানের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। 

এক সপ্তাহের মাথায় এই কমিটি প্রধান বিচারপতির কাছে প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন দিয়েছে বলে জানা গেছে। সে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই আইনজীবীদের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন এ এম আমিন উদ্দিন। অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিচারাঙ্গনে অনিয়ম-দুর্নীতিতে আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি আইনজীবীদের জড়িত থাকারও অভিযোগ ওঠে। আইনজীবীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠলে কে ব্যবস্থা নেবে? 

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, 'কোনো আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে আমরা কী না করেছি? যদি অভিযোগ আসে তারও বিচার হবে। সে বিচার বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ করবে। ইতিমধ্যে আদালত থেকে কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে (বার কাউন্সিলে) পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলোর বিচার হচ্ছে।’ 

আদালত অনিয়ম-দুর্নীতির প্রাথমিক অনুসন্ধানে কমিটি করে দিয়েছেন, বার কাউন্সিলের এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আদালত হচ্ছে সব কিছুর ঊর্ধ্বে। অতএব কোর্টের কমিটি কোনো আইনজীবীকে ফাইন করলে বার কাউন্সিল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’

এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি প্রথম দিনেই বলেছেন, উনি অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন এবং এর জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছেন। এই কমিটি প্রাথমিক একটি রিপোর্ট দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আইনজীবীরা সবাই চায় একটু সুন্দর পরিবেশে কাজ করতে। হয়রানি-ঝামেলা ছাড়া কাজ করতে। আশা করি প্রত্যেক আইনজীবী এ কাজে (অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করার কাজে) সহযোগিতা করবে। যদি অনৈতিক কোনো দাবি কেউ না করে তাহলে আইনজীবীরা অবশ্যই সুন্দরভাবে ভালােভাবে পেশা পরিচালনা করতে পারবে।’

সৈয়দ মাহমুদ হোসেনর অবসরে যাওয়ার পর গত ৩১ ডিসেম্বর দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এরপর প্রথা অনুযায়ী গত ২ জানুয়ারি প্রথম কর্মদিবসে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়  অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও  সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে। সেই অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘দুর্নীতির ব্যাপারে আমি কম্প্রোমাইজ করব না। কোনো রকম দুর্নীতি হলে আমি সাথে সাথে স্টাফ, অফিসার যে-ই হোক না কেন, সাসপেন্ড করব।’ পরে গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি ‘প্রাথমিক অনুসন্ধান’ কমিটি গঠন করেন প্রধান বিচারপতি