বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভনে নারী খেলোয়াড়দের ধর্ষণ করতেন নিউটন: র‌্যাব

বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভনে নারী খেলোয়াড়দের ধর্ষণ করতেন নিউটন: র‌্যাব
বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভনে নারী খেলোয়াড়দের ধর্ষণ করতেন নিউটন: র‌্যাব
​​​​​​​নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভনে নারী খেলোয়াড়দের ধর্ষণ করতেন নিউটন: র‌্যাব

জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটন বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে ক্রীড়াবিদ নারীদের ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। এছাড়াও অ্যাসোসিয়েশনের ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ মেয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভপাত করানোর মতো ভয়ংকর কাজ করেছেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‌্যাব জানায়, নিউটন অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে ঢুকে তাদের ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও নগ্ন ছবি তুলে রাখতেন। এসব কর্মকাণ্ডে নিউটনকে সহায়তা করতেন অ্যাসোসিয়েশনের আরেক নারী।

গত ১৮ মে রফিকুল ইসলাম নিউটনের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা (নং-৩০) করেন জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের একজন নারী খেলোয়াড়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১৮ মে) দুপুরে রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি রফিকুল ইসলাম নিউটন ও তার সহযোগী একজন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‍্যাব-১২ এর একটি অভিযানিক দল এ অভিযান চালায়।

শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

র‌্যাবের এই পরিচালক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন। রফিকুল ইসলাম নিউটন একজন জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষক। অ্যাসোসিয়শনের অধিকাংশ প্রশিক্ষণার্থী নারী। অভিভাবক হিসেবে নিউটন এই কোমলমতি মেয়েদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। কিন্তু সেই ব্যক্তি কোমলমতি মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার প্রয়াস চালায়।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, রফিকুল ইসলাম নিউটন অ্যাসোসিয়েশনের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভপাত করিয়েছে। এমনকি অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে প্রবেশ করে তাদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও নগ্ন ছবি তুলে রাখতেন। পরে ধারণ করা নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে ব্ল‍্যাকমেইল করে বারবার ধর্ষণ করত।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী মামলা করলে আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপন করে এবং আত্মগোপনে থাকাকালীন অবস্থায় র‍্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে। মামলার এজাহারভুক্ত দ্বিতীয় আসামি নারী খেলোয়াড়কে ইতোমধ্যে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার নিউটন অ্যাসোসিয়েশনের অপর এক নারী খেলোয়াড়ের সহায়তায় অন্য নারী খেলোয়াড়দের মিথ্যা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন হয়রানিসহ জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতেন।

ভুক্তভোগী নারী গত দুই বছর ধরে জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুলের অধীনে জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আসছিল। খেলার প্রশিক্ষণকালীন সময়ে রফিক বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগী নারীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করতেন।

পরে ভুক্তভোগী প্র্যাকটিস শেষে চেঞ্জিং রুমে পোশাক পরিবর্তন করার সময় তাকে রুমের মধ্যে আটকে রেখে রফিকুল ইসলামকে ডেকে আনে গ্রেপ্তার নারী আসামি। পরে রফিকুল ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। এরপর গ্রেপ্তার নারী খেলোয়াড় রুমে ঢুকে মোবাইল ফোনে ভুক্তভোগীর নগ্ন ছবি ধারণ করে এবং কাউকে জানালে ভুক্তভোগীর নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিছুদিন পর রফিকুল ইসলাম ভুক্তভোগীর নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে