কাজে ‘না’ বলায় ফেলা হয় ৫ তলা থেকে

কাজে ‘না’ বলায় ফেলা হয় ৫ তলা থেকে
কাজে ‘না’ বলায় ফেলা হয় ৫ তলা থেকে
মাসুদ রানা

অনৈতিক কাজে ‘না’ বলায় ফেলা হয় ৫ তলা থেকে

যুবলীগ নেত্রী মিশু ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে চার্জশিট

কিশোরীকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করাসহ নির্যাতনের অভিযোগে ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ মেহনাজ তাবাসসুম মিশু ও তার স্বামী আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।

সম্প্রতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার উপপরিদর্শক মো. জহুরুল ইসলামের দাখিল করা চার্জশিটে বলা হয়েছে, পড়ালেখার জন্য যুবলীগ নেত্রী মিশুর বাসা ভাড়া নিয়ে একাই থাকত ১৫ বছরের ওই কিশোরী। পরে দুজনের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে মিশু তাকে অনেক টাকা উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে বড়লোকের ছেলেদের সঙ্গে মেলামেশা করতে বলেন। মেয়েটি রাজি না থাকলেও জোরপূর্বক তাকে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ছেলের সঙ্গে কথা বলতে বাধ্য করতেন।

চার্জশিটে বলা হয়েছে, মিশু ও তার স্বামী আতিকুর ওই কিশোরীকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করাতে না পেরে মারধর করতেন। সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকাও দেওয়া হতো। এমনকি আতিকুর তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের চেষ্টাও করেন। মেয়েটি যাতে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে, সেজন্য তার মোবাইলও কেড়ে নেন মিশু। গত বছরের ২৪ জুলাই স্বামী-স্ত্রী মিলে কিশোরীকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলেন। পরদিন ফের মারধর ও নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশে ভোরে বাসার পঞ্চমতলার বেলকনি থেকে তাকে নিচে ফেলে দেন। ভুক্তভোগী বেঁচে গেলেও তার কোমরের হাড় ভেঙে যায়।

কিশোরীকে নির্যাতনের ঘটনায় পরিবার বাদী হয়ে সাভার থানায় মামলা করে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৯ আগস্ট সাভার উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তারের পর সংগঠন থেকে বহিষ্কার হন মিশু। এরপর তিন দিনের রিমান্ড শেষে ২৭ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠান আদালত। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে কারামুক্ত হন। এ মামলায় মিশুর স্বামী আতিকুর কারাগারে আটক রয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জহুরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। সাক্ষীরা মামলার ঘটনার সতত্য প্রমাণ করবে

ভুক্তভোগীর মা ও মামলার বাদী কালবেলাকে বলেন, আমার মেয়ের মেরুদণ্ডের হাড় উঁচু হয়ে থাকে। ব্যথার জন্য চলাফেরা করতে পারে না। তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। মামলার পর তেমন কোনো অগ্রগতি জানি না। আসামিরা প্রভাবশালী, তারা সাক্ষীদের হুমকি দেয়। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

যুবলীগ নেত্রী মিশুর আইনজীবী মুন্সী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামি নির্দোষ। যেহেতু মামলার চার্জশিট হয়েছে, তাকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করব