বাংলাদেশে মাতৃভাষা দিবসে ইংরেজি ব্যানার নিয়ে স্কুলের প্রভাতফেরি, সমালোচনার ঝড়
মাতৃভাষা দিবসে ইংরেজি ব্যানার নিয়ে স্কুলের প্রভাতফেরি, সমালোচনার ঝড়
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বরিশালে ইংরেজিতে লেখা ব্যানার নিয়ে প্রভাতফেরি করেছে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বুধবার সকালে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ওই ব্যানার নিয়ে প্রভাতফেরি শেষে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে এটি তুচ্ছ বিষক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগরীর কলেজ রোড থেকে প্রভাতফেরি নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে আসার পর উপস্থিত অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এমন কর্মকাণ্ডে বিব্রত খোদ অভিভাবকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই অভিভাবক বলেন, স্কুলে এসে ইংরেজিতে লেখা ব্যানার দেখেই আমরা বলেছি এটা ঠিক হয়নি। এতে বাংলা ভাষার অমর্যাদা হয়েছে বলেও জানান তারা।
তাদের মতে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বলতে যার যার ভাষায় সে শহীদদের স্মরণ করবে। আমরা বাঙালি, বাংলা ভাষার জন্য অনেককে রক্ত দিতে হয়েছে। কোনো ইংরেজ রক্ত দেয়নি। আমার ভাষার জন্য আন্দোলনের কারণেই ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। অথচ বাংলা ভাষাই উপেক্ষিত হয়েছে। এই কাজের মধ্য দিয়ে স্কুলের কাণ্ডজ্ঞানহীনতা প্রতীয়মান হয়েছে বলেও মনে করছেন তারা।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সুশান্ত ঘোষ বলেন, মাতৃভাষা দিবসে এমন কাজ নিজের ভাষাকে অপমান করার শামিল। এমন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে অপমান করা হয়েছে । বাংলা ভাষার অপমান যারা করেছে তারা নিজের মাকে অপমান করেছে। মূলত এসব স্কুল ব্যবসা করতে এসেছে। দেশের প্রতি এদের কোনো দায়িত্ব কর্তব্য নেই।
গবেষক দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, শহীদ দিবস তো বাঙালি জাতির ত্যাগের দিন। ইংরেজি ব্যানার নিয়ে বাঙালিদের প্রভাতফেরি করা বাংলা ভাষাকে অপমান করার সমান। একজন ইংরেজি ভাষার মানুষ যদি ইংরেজি অক্ষরে লেখা ব্যানারে নিয়ে শহীদ মিনারে এসে তার মাতৃভাষার প্রতি সম্মান জানায় সেটা একটা বিষয় আর যদি বাংলা ভাষার মানুষ ইংরেজিতে লেখা ব্যানার নিয়ে শহীদ মিনারে আসে তাহলে বাংলাকে অপমান ও শহীদদের অমর্যাদা করা হয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক বরিশালের সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, এর মাধ্যমে বাঙালি জাতির সঙ্গে বেইমানি করা এবং ধৃষ্টতা দেখানো হয়েছে। যারা শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিল তাদের উচিত ছিল ব্যানারটি ছিড়ে প্রতিবাদ করা। কারণ এই ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি।
তবে এসব বিষয়কে তুচ্ছ দাবি করে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান সালেহ মাহামুদ শেলী বলেন, আন্তর্জাতিক ভাষা তো ইংরেজি। তাই ইংরেজি ব্যানার নিয়ে প্রভাতফেরি করা হয়েছে