বাংলাদেশে ফের বোয়িং বিক্রির আগ্রহের. কথা জানালেন পিটার হাস
ফের বোয়িং বিক্রির আগ্রহের কথা জানালেন পিটার হাস
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এই মতবিনিময়ের সময়ে রাষ্ট্রদূত ফের বাংলাদেশের কাছে বোয়িং বিক্রির আগ্রহের কথা জানান। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়েও আলোচনা করেন তিনি।
অবশ্য বিমানমন্ত্রী আর্থিক ও কারিগরি দিকসহ সবকিছু বিবেচনা করে যেটি ভালো হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পিটার হাসকে। তিনি রাষ্ট্রদূতকে ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানা
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে থাকা ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ১৬টিই আমেরিকান এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির। তবে গত বছর বাংলাদেশ ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস থেকে ১০টি উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। এরপর বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে তাদের কোম্পানির উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দেয়। এর আগেও বিগত সরকারের বিমান প্রতিমন্ত্রী, সিভিল এভিয়েশন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করে পিটাস হাস বোয়িং কেনার প্রস্তাব দেন।
সচিবালয়ে পিটার হাস সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়ের পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, দেশের পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্বের ভিত্তিতে একসঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশের পর্যটন ও এভিয়েশনকে এগিয়ে নিতে আমরা দুই দেশ আগেও একসঙ্গে কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে আমাদের এই দুটি খাতে আরও সাহায্য করতে পারে তা আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অতীতেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মতের অমিল হলেও আমরা বন্ধুত্বের স্বার্থে সেটা আলোচনা করে সমাধান করেছি। নিউইয়র্কে আমাদের বিমানের স্লট যেন আমরা তাড়াতাড়ি ফিরে পেতে পারি সেই বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও সামনে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কিছু প্রক্রিয়া বাকি আছে, আমরা তা দ্রুত শেষ করতে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি ও বাংলাদেশ বিমানকে সহায়তা করব।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন উড়োজাহাজ কেনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িং তার প্রস্তাব জমা দিয়েছে। আমরা চাই বোয়িং যেন এই উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং এই প্রক্রিয়াটি যেন একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিমানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই চায়, বাংলাদেশ বিমানে আরও বোয়িং উড়োজাহাজ যুক্ত হোক। তবে আমরা আর্থিক ও কারিগরি দিকসহ সবকিছু বিবেচনা করে যেটি ভালো হবে সেই সিদ্ধান্ত নেব। বোয়িং বা এয়ারবাস যে কোম্পানি থেকে কিনলে বাংলাদেশের জন্য সুবিধা হবে আমরা সেখান থেকেই কিনব।
নিউইয়র্কের সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে এফএএ অডিট কবে নাগাদ সম্পন্ন হতে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, বর্তমানে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষে আইকাও-এর একটি অডিট টিম কাজ করছে। তারা যাওয়ার পরে আমরা একটা সুবিধাজনক সময় এফএএ-কে অডিটের জন্য আমন্ত্রণ জানাব। তবে সেটা এ বছরই হবে বলে আশা করছি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাতের পর বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য স্বাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে ৮০ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী বসবাসের তথ্য জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার তাদের দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি আকাশ যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
জবাবে বিমানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে একত্রে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে পর্যটনের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানান