বাংলাদেশে ড. ইউনূসের মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: ট্রায়ালওয়াচ   ​​​​​​

বাংলাদেশে  ড. ইউনূসের মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: ট্রায়ালওয়াচ    ​​​​​​
বাংলাদেশে  ড. ইউনূসের মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: ট্রায়ালওয়াচ    ​​​​​​

ড. ইউনূসের মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: ট্রায়ালওয়াচ

শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলাগুলো রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিসের উদ্যোগ ট্রায়ালওয়াচ। বিশ্বব্যাপী অপরাধমূলক বিচার পর্যবেক্ষণ এবং অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে সংস্থাটি।

Nagad_Ad

শুক্রবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বাংলাদেশ ভার্সেস মুহাম্মদ ইউনূস শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রায়ালওয়াচ

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচারপ্রক্রিয়া পর্যালোচনার ভিত্তিতে অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়ার অপব্যবহার খুঁজে পাওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ দেখা গেছে। এতে দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে যে দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

ড. ইউনূসের সমর্থকদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, এই মামলাটি ড. ইউনূসকে হেয়প্রতিপন্ন করতে প্রশাসনের নিরলস প্রচারণার অংশ। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে ড. ইউনূস ও তার সহযোগী কোম্পানির বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ট্রায়াল ওয়াচ আরও বলছে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক; কারণ ২০২৪ সালের জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগে সমালোচকদের বিরুদ্ধে সরকারের ক্রমবর্ধমান দমনপীড়ন, বিরোধী নেতাদের ব্যাপক গ্রেপ্তারের কারণে সিভিকাস মনিটর বাংলাদেশের নাগরিক পরিষেবাকে সবচেয়ে কম রেটিং দেয়।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনসহ শত শত বিশ্ব নেতা ও নোবেল জয়ী দুটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। যেখানে তারা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক মামলাগুলোকে ধারাবাহিক বিচারিক হয়রানি হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযোগ গঠনের সাত মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এবং জাতীয় নির্বাচনে মাত্র এক সপ্তাহ আগে গত ১ জানুয়ারি অধ্যাপক ইউনূসকে দোষী সাব্যস্ত করে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়। ৯০ এর দশকে দরিদ্রদের হাতে মোবাইল তুলে দিতে এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকম নামে যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলেন সেখান থেকেই শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলাটি করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী ক্ষমতাহীন চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড. ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকম বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের আট সদস্যের মধ্যে তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। চার জনই গত ২৮ জানুয়ারি তাদের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন এবং ৩ মার্চ শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ফাইল তলব করে। ড. ইউনূস ও অন্য তিনজন এখন জামিনে আছেন। এদিকে আগামী ৩ মার্চ ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকম বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলার শুনানির দিন ধার্য আছে।

ট্রায়ালওয়াচের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ায় যে জটিল রাজনৈতিক পরিবেশে হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আনা আরও অনেক মামলা, ইউনূস সম্পর্কে শেখ হাসিনার বিবৃতি, বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত প্রকৃতির মতো কয়েকটি কারণের ভিত্তিতে অযৌক্তিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল বলে মনে হয়। গ্রামীণ টেলিকমের আরও অনেকের মধ্যে ইউনূসকে বাছাই করে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা, শ্রম কর্তৃপক্ষের অস্বাভাবিক আক্রমণাত্মক এবং সম্ভাব্য অপ্রত্যাশিত ব্যাখ্যা এবং পদ্ধতিগত অনিয়ম রয়েছে।

এই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রতি ইউনূস ও তার সহঅভিযুক্তদের দণ্ড বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রায়ালওয়াচ। একই সঙ্গে আপিল কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর ট্রায়ালওয়াচ তার প্রতিবেদন আপডেট করবে বলে জানিয়েছে