আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা: ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে একটা ভারসাম্য বজায় রাখা একান্তভাবে দরকার। আপনারা রফতানি করেন, রফতানি করার সময় যে অর্থ ব্যবহার হয়, তার যে রিটার্ন আসবে ঠিক চাহিদামতো ভাবে তা আসে না। এদিকে সবাইকে আরও একটু যত্নবান হওয়ার জন্য আহ্বান জানাই।’ রোববার (২১ জানুয়ারি) সকালে দেশের ২৮তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করে বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো দেশে পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় আয়োজন ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)।
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের কাঞ্চন সেতু থেকে উত্তরে কিছু দূর গেলেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে (বিবিসিএফইসি) মেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার কাছে ক্ষমতা কোনো ভোগের বস্তু না, আমার কাছে ক্ষমতা হলো দেশে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের একটা সুযোগ। মানুষের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ, মানুষকে সেবা দেওয়ার একটা সুযোগ আবার পেয়েছি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পেরেছি। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটের মাধ্যমে আমাদের আবার ক্ষমতা বা সেবা করার সুযোগ দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যের যদি প্রসার না ঘটে, কোনো দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছিলাম, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আমরা উৎক্ষেপণ করেছি। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা। আমরা প্রমাণ করেছি, বাংলাদেশের জনগণকে কেউ চ্যালেঞ্জ দিয়ে দাবায়ে রাখতে পারবে না।’
ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে একটা ভারসাম্য বজায় রাখা একান্তভাবে দরকার।’ এসময় তার সরকারের মেয়াদে উৎপাদন বৃদ্ধিতে বহুমুখী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশটা আরও এগিয়ে যাক। আরও উন্নত হোক, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হোক। আমরা খুব ভালো ভালোই যাচ্ছিলাম। আমাদের প্রবৃদ্ধিও ৮-এর কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলাম।’ এসময় তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন ও কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে নানামুখী সংকটের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মতো যারা কেবল উঠতি অবস্থায় আছি, সেই সময় এটা একটা বিরাট ধাক্কা আমাদের অর্থনীতির উপর এসে পড়েছে। তারপরও ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সচল থাকে সে লক্ষে তার সরকার ব্যবসায়ীদের বিশেষ প্রণোদনা, স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা, ভতুর্কিসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখার চেষ্টা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রফতানিতে সুনির্দিষ্ট কয়েকটা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু একটা-দুটো পণ্যের উপর নির্ভরশীল থাকলে আমাদের চলবে না। আমাদের রফতানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে আরও সুযোগ বাড়াতে হবে। যে পণ্যকে আমরা বেশি সুযোগ দিচ্ছি, তারাই ভালো করছে। তাহলে আমার অন্য পণ্যগুলি কেন বাদ যাবে? তাদেরও আমাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। যাতে তারাও সেইভাবে সুযোগ পায়।’
এছাড়া পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া শিল্পজাত পণ্য, আইসিটি, খাদ্য পণ্যসহ বিভিন্ন রকম পণ্যগুলোর দিকেও ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের রফতানি জোরদার করণে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল হক টিটুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইসএম আহসান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক