বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন
বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির দুই পার্লামেন্ট সদস্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হক ও আপসানা বেগম।
একই সঙ্গে দুই পার্লামেন্ট সদস্য গণগ্রেপ্তার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়াসহ মানবাধিকারের বিষয়ে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার পার্লামেন্ট অধিবেশনে অংশ নিয়ে রূপা হক ও আপসানা বেগম বাংলাদেশ পরিস্থিত নিয়ে কথা বলেন।
রূপা হক পার্লামেন্টের স্পিকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনি ও আমি দুজনেই চীনের তিয়েন আনমেন স্কয়ারের ঘটনা মনে রাখার মতো বয়সী। বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগকে আমাদের সরকার যথাযথভাবে নিন্দা করেছে। এই ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্তের চাপ তৈরির জন্য আমি কি অনুরোধ করতে পারি?
রূপা হক বলেন, আন্তর্জাতিক উপাদান থাকা সত্ত্বেও যে দেশ বহির্বিশ্বের সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করতে পারে এবং সব প্রতিষ্ঠানকে তাদের ‘স্টর্মট্রুপার’–এর মতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তখন কীভাবে আমরা তদন্তের ওপর আস্থা রাখতে পারি? পুলিশকে কেবল নিজের সীমার মধ্যে কাজ করার অনুমতি দেওয়া উচিত নয় কি?’
রূপা হকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি ক্যাথেরিন ওয়েস্ট বলেন, ‘আমার বন্ধুর উদ্দেশে বলছি, এ বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অবস্থান খুবই স্পষ্ট এবং বাংলাদেশে গত দুই সপ্তাহে যা ঘটেছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার প্রকৃতিসহ বেশ কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করেছি, যা বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করছে।’
আপসানা বেগম বলেন, ‘বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনকারীদের উচ্চমৃত্যুর সংখ্যার পরে গণগ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন, বেআইনি হত্যা ও ভিন্নমতের বিরুদ্ধে সরকারের দমন–পীড়ন আরও তীব্র হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আমাদের মন্ত্রী কি আমার সঙ্গে একমত, বাংলাদেশিদের অবশ্যই প্রতিবাদ করার অধিকারসহ তাদের মৌলিক মানবাধিকার প্রয়োগের অধিকার থাকতে হবে? তিনি কি বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে দমন–পীড়নের মুখোমুখি বাংলাদেশিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে আমার সঙ্গে যোগ দেবেন?
জবাবে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, আপসানা তাঁর নির্বাচনী এলাকা যুক্তরাজ্য ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের জন্য একজন চ্যাম্পিয়ন ব্যক্তিত্ব। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে জবাবদিহি এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে।
আপসানা তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতিবাদ করার অধিকারসহ মৌলিক মানবাধিকার চর্চার ক্ষমতা অবশ্যই থাকতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ যে দমন–পীড়নের মুখোমুখি, সেই সময় আমি তাঁদের পাশে আছি