ফেনী সীমান্তে ভারত থেকে আসা বানরের হানা, বিড়ম্বনায় কৃষক
প্রথম সময় ডেস্ক;
ফেনী সীমান্তে ভারত থেকে আসা বানরের হানা, বিড়ম্বনায় কৃষক
“বানর তো অনেক আমনের, এই ধরেন হাজার খানেক বানর এক সাথে নামে। প্রতিদিন না হইলেও মানুষের খেতের বেগুন, লাউ, মিষ্টি-কুমড়া, বরবটি এসব গাছগুলা সব খাইয়া ফালায়। ওরা তো জালাও খায়, ধান খায়, সব খায়,” নিজের ফসলি জমিতে বানরের হানায় ক্ষয়ক্ষতির কথা জানাতে গিয়ে এই কথাগুলো বলছিলেন কৃষক আবুল বশর মজুমদার।
তিনি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দক্ষিণ পৈথরা গ্রামের বাসিন্দা।
বাংলাদেশে সম্প্রতি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী অন্তত পাঁচটি গ্রামে বানরের উৎপাত শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এসব গ্রাম হচ্ছে পৈথারা, কামাল্লা, জামমুড়া, ফকিরের খিল এবং বদরপুর।
প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে এসব বানর বাংলাদেশে আসছে। গত প্রায় মাসখানেক ধরে দলবদ্ধ এমন বানর দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জমি রয়েছে মি. মজুমদারের। এসব জমিতে ধান চাষ করেছিলেন তিনি।
এরই মধ্যে তার সেই জমির কেটে রাখা ধান খেয়ে ফেলেছে বানর। আর তাই বানরের হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে রীতিমতো পাহারা দিতে হচ্ছে তাকে।
“গতকালও বেলা সাড়ে বারটার দিকে এখানে ছিল। এর পরে আমরা সাত-আটজন মিলে সেগুলারে তাড়ায়ে দিসি। পরে আর হয় নাই। মানুষ কাজ করে তো, সবার জালা খায়া ফালাইছে, সবাই তাড়া দিসে একসাথে।”
তিনি বলেন, “দুই একজনরে ভয় পায় না, এই তিন চার জন মিলে লাঠি-সোটা নিয়ে বাইর হইলে ভয় পায়, না হইলে ভয় পায় না।”
মুন্সিরহাট ইউনিয়নের মেম্বার শাহাদাত হোসাইন বলেন, প্রায় মাসখানেক হলো এতো বানর দেখা যাচ্ছে এলাকায়। আগে এগুলো ছিল না।
মি. হোসাইন দাবি করেন, প্রায় হাজার দুয়েক বানর এবার এই এলাকাতে দেখা যাচ্ছে। এর আগে কখনো বানর দেখা যায়নি বলেও জানান তিনি। প্রতিদিনই সীমান্ত ঘেঁষা এলাকার কোথাও না কোথাও দেখা যায় এই বানরগুলোকে।
“প্রতিদিনই আসে, এক দিক দিয়া, না তো আরেকদিক দিয়া। এখান দিয়া বর্ডার অনেক লম্বা তো। একেকদিন একেক জায়গায় নামে এগুলো,” বলেন তিনি।
“আজকে সকালে একজন আমাকে বললো যে, জামমুড়া গেছে এইগুলো। একেক টাইমে একেক জায়গাতে থাকে। কোনও ঠিক নাই।”
তিনি বলেন, ভারতের ভেতরে যে বাসিন্দারা আছে তারা এগুলোকে তাড়িয়ে দেয়। এ কারণেই বানরগুলো সীমান্ত পার করে বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়ে।
“ওই দিকেও খেত-খামার করছে তো মানুষে, ওই দিক থিক্যাও তাড়ায়। তাড়াইলে এই দিকে চলে আসে বানর।”
ভারত থেকে আসা এসব বানর শীতকালীন বিভিন্ন সবজি, মাল্টা ও ধানের চারা খেয়ে ফেলে বলে জানালেন স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি।
“যত না খায়, তার চেয়ে বেশি নষ্ট করে এইগুলো। মানুষ নালিশ করে। পাহারা দিয়ে রাখতি পারে না। এক দুই জন লোক এরা ভয়ও পায় না।”
মুন্সিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ভূঞা বলেন, এই বানরগুলো কয়েক মাস পর পর ভারত থেকে আসে। তবে এই বানরের সংখ্যা বেশি থাকে না বলেও জানান তিনি।