ধর্ষণ ও হত্যা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক নজরদা
পুজা মজুমদার
ধর্ষণ ও হত্যা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক নজরদারি
কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের শিকার হওয়ার ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কী লেখা হচ্ছে, তার ওপরে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাসহ সারাদেশে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ বিক্ষোভ করছেন।
এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন-বিরোধী সব দলগুলো প্রতিবাদ করছে এই ঘটনার।
রাতের বেলায় নারীর নিরাপত্তার দাবিতে বুধ আর বৃহস্পতিবারের মাঝ রাতে লাখ লাখ নারী-পুরুষ কলকাতার রাস্তা দখল করে বিক্ষোভ করছেন।
এরপর নির্মম ওই ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসি চেয়ে শুক্রবার মিছিল করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। আবার ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে মিছিল করেছে বিজেপি।
মিছিল, পাল্টা-মিছিল, বনধ একই সঙ্গে সব চলেছে
পুলিশের নজরদারি কীভাবে কেন হচ্ছে
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা নিয়ে যেসব পোস্ট পুলিশের কাছে আপত্তিকর মনে হচ্ছে, তাদের নোটিশ পাঠিয়ে পোস্ট মুছে দিতে বলা হচ্ছে।
আবার পুলিশ সদর দফতরে ডাকও পড়ছে কারও কারও।
পুলিশ যাদের ইতোমধ্যে ডেকে পাঠিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সংসদ সদস্য, একজন নামকরা চিকিৎসক এবং একজন সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
ভারতের স্থানীয় সংবাদপত্রে পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে লেখা হচ্ছে যে এরকম প্রায় ২০০ জন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
কোনও একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমের ওপরে এ ধরণের পুলিশি নজরদারি এর আগে দেখা যায় নি।
তৃণমূল কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের নেতা ও সংসদ সদস্য সুখেন্দু শেখর রায় এ ঘটনা নিয়ে বরাবরই সরব ছিলেন। নামকরা শল্য চিকিৎসক কুনাল সরকার একটি ইউটিউব ভিডিও করেছিলেন ওই ধর্ষণ ও হত্যার বিষয় নিয়ে।
এদের দুজনকে ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ।
অন্যদিকে, কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বারবার নিজেরাই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আহ্বান জানাচ্ছে যে, আরজি করের ঘটনা নিয়ে বহু গুজব ও ভুয়া বা মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
নাগরিকদের এ ধরণের তথ্য সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা বা পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।
একই সাথে, সামাজিক মাধ্যমে গুজব ও ভুয়া তথ্য না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ধর্ষণের শিকার ও খুন হওয়া চিকিৎসকের পরিবার-পরিজনও।
তবে, সামাজিক মাধ্যমে এভাবে পুলিশি নজরদারি যেমন আগে দেখা যায় নি, তেমনই একের পর এক অভাবনীয় প্রতিবাদ হচ্ছে আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ চলছে এখনো। নানা স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিলে নামছে কলকাতা এবং মফস্বল শহরগুলোতে।
সোমবারও শহর জুড়ে নানা বিক্ষোভ মিছিল, জমায়েত হবে বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিবাদ হচ্ছে রাজ্যের বাইরেও।
সারা দেশে জুনিয়র এবং রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে।
দিল্লিতে এইমস-এর ধর্মঘটী রেসিডেন্ট ডাক্তারদের সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সোমবার থেকে তারা রাজধানী দিল্লির নির্মাণ ভবন, যেখানে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দফতর, তার সামনে রাস্তায় বসে রোগী দেখবেন ডাক্তাররা