ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যে শর্ত দিলেন পুতিন

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যে শর্ত দিলেন পুতিন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যে শর্ত দিলেন পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যেকোনো শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার আগে ইউক্রেনকে অবশ্যই রুশ অধিকৃত নতুন অঞ্চলগুলো থেকে সেনা সরিয়ে নিতে হবে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বেরে গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল- দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেন পুতিন। তবে প্রতিটি অঞ্চলেই এখনো দুপক্ষের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

শুক্রবার মস্কোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং অন্যান্য সিনিয়র রুশ কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন এ শর্ত দেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরটি।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের পক্ষ যুদ্ধবিরতির আদেশ দেবে এবং আলোচনা শুরু করবে, ঠিক যে মুহূর্তে কিয়েভ ঘোষণা করবে- তারা অঞ্চলগুলো থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের জানাবে যে তারা আর ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে না।’

আরটি বলছে, রাশিয়া শান্তি আলোচনায় বসতে চায় না, ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্রদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এই শর্তগুলোর রূপরেখা দিয়েছেন পুতিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা কিয়েভের উপর নির্ভর করছি প্রত্যাহার, নিরপেক্ষ অবস্থান এবং রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য... যার উপর ইউক্রেনের ভবিষ্যত অস্তিত্ব নির্ভর করে... স্বাধীনভাবে বর্তমান বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে এবং ইউক্রেনীয় জনগণের প্রকৃত স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত এবং পশ্চিমা আদেশে নয়।’

রাশিয়ান নেতা আরও বলেন, কিয়েভে ২০১৪ সালের সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পর পশ্চিমারা ইউক্রেনের বিষয়ে হস্তক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। এই মুহুর্তে, মস্কো একটি হিমায়িত সংঘাতকে মেনে নেবে না, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে পুনরায় সজ্জিত ও পুনর্গঠনের অনুমতি দেবে।

পুতিন আরও দাবি করেছেন, যুদ্ধ সম্পূর্ণ রুপে বন্ধে কিয়েভকে চারটি নতুন অঞ্চলের পাশাপাশি ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এই শর্তাদি গ্রহণ করলে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত সম্পর্ক পুনর্গঠনের অনুমতি দেবে রাশিয়া।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। মূলত ইউক্রেন যাতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে না পারে তা ঠেকানোর লক্ষ্য নিয়ে এই অভিযান শুরু করেছিল রাশিয়া। ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে তা রাশিয়ার জন্য নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়াবে উল্লেখ করে বারবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সর্তক করেন পুতিন। তা সত্ত্বেও ন্যাটোর সদস্য হতে তোড়জোড় শুরু করেন জেলেনস্কি।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধে দুপক্ষের মধ্যে এখনো তীব্র লড়াই চলছে। মাঝে গত বছরের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সহায়তা কমে যাওয়ায় পিছিয়ে পড়ে ইইক্রেন। তবে গত মাসে ইউক্রেনকে ৬০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সহায়তা পেয়ে আবারো চাঙা হয়ে উঠেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী