কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানো, এসপির জাগরণ—যেসব চমক দেখা গেল ভারতের নির্বাচনে
![কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানো, এসপির জাগরণ—যেসব চমক দেখা গেল ভারতের নির্বাচনে](https://prothomsomoy.com/uploads/images/2024/06/image_750x_665f7d0bd120e.jpg)
কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানো, এসপির জাগরণ—যেসব চমক দেখা গেল ভারতের নির্বাচনে
ভারতের সাম্প্রতিকতম ইতিহাসে এবারের লোকসভা নির্বাচনকে ব্যতিক্রমই বলা চলে। জয় পেয়েও বিজেপি যেন পরাজিত। আর হেরে গিয়েও বিরোধী দল কংগ্রেস করছে উল্লাস। আসলেই দেশটিতে এবারের লোকসভা নির্বাচনে চমক দেওয়ার মতো কিছু ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো কী কী—চলুন দেখে নেওয়া যাক।
সব বাধা টপকে কংগ্রেসের ফিরে আসা
কোনো সন্দেহ নেই যে কংগ্রেস তার পুরোনো উদ্যম ফিরে পেয়েছে। ইন্ডিয়া জোট গঠন, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা, দলপ্রধান মল্লিকার্জুন খাগড়ের নেতৃত্ব বা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর জোরালো প্রচারণা—সবকিছুই এবারের নির্বাচনে ঐতিহাসিক এ দলটির লাভের হিসাব বাড়িয়েছে। আত্মপ্রকাশের পর থেকে কখনোই ক্ষমতাসীন দলের এমন সর্বাত্মক আক্রমণাত্মক ও হয়রানিমূলক প্রচারণার মুখে পড়েনি দলটি। এরপরও তারা ধীরেসুস্থে এগিয়েছে। নিজেদের মর্যাদা ধরে রেখেছে। আর সাংবিধানিক রীতিনীতি মেনে চলেছে।
এগিয়েছে সমাজবাদী পার্টির ‘সাইকেল’
উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির (এসপি) নির্বাচনী প্রতীক ‘সাইকেল’। থমকে থাকা সেই সাইকেল এবারের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গতি পেয়েছে। নেতা অখিলেশ যাদব শুধু দলের ভেতরের দ্বন্দ্ব মেটাতেই সফল হননি, বিশাল এ রাজ্যে নতুন রাজনৈতিক জোটও গড়ে তুলেছেন। সত্যিকার অর্থেই উত্তর প্রদেশে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে সমাজবাদী পার্টি। অখিলেশ ও তাঁর দলের সদস্যরা রাজনৈতিকভাবে কতটা পোক্ত হয়েছেন, তা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পরীক্ষার মুখে পড়বে। এই সময়টাতে সাইকেলের চাকা কোনোভাবেই ফেঁসে গেলে চলবে না।
মমতার ‘খেলা হবে’
পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সূর্য যেন কখনোই অস্ত যায় না। তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও বিরোধীদের সামলানোর দক্ষতা, বোঝার ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে। তিনি তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। ইন্ডিয়া জোটের সদস্য হয়েও লোকসভা নির্বাচনে একাই পশ্চিমবঙ্গে নিজের রাজত্ব কায়েম রেখেছেন মমতা। যেসব আসনে তৃণমূল জয় পেয়েছে, তা তাঁর অক্লান্ত প্রচারণা, মানুষের মন পড়ার ক্ষমতা এবং বিরোধীদের বাধা সামলানোর দক্ষতার ফসল। ইন্ডিয়া জোট ও ভারতের জন্য মমতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়েই থাকবে।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ধস, তৃণমূলের ব
চমক দিতেই থাকবে বিহার
আলু ছাড়া যেমন শিঙাড়া হয় না, তেমনই নীতীশ কুমার ও তাঁর জনতা দল ইউনাইটেড (জেডি-ইউ) ছাড়া বিহারের রাজনীতি অচল। বিহারের ৯ বারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ আবারও লোকসভা নির্বাচনে নিজের অনন্য দক্ষতার নজির রেখেছেন। ঠিক সময়ে, ঠিক জোটের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাও বেড়েছে। নীতীশ ও তাঁর দলের সদস্যরা আগামী কয়েক দিনে সরকার গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
আলোচনায় চন্দ্রবাবু নাইডু
অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডু পোড় খাওয়া রাজনীতিক। তিনি দেখিয়েছেন—একজন কৌশলী রাজনীতিককে এত সহজে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায় না। নাইডুর রাজনৈতিক জীবনজুড়ে ঘাত-প্রতিঘাত এসেছে। তবে ২০২৪ সালের এই সময়টা যেন সফলতার চূড়ায় রয়েছেন তিনি। যদিও নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি এখন এনডিএ জোটের সদস্য, তবে কত দিন থাকবে, তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ রয়েছে। সরকার গঠনে তাই নীতীশের মতো তিনিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছেন। সবার চোখ এখন বলতে গেলে অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে।
তিন কারণে ছয় রাজ্যে আসন কমেছে বিজেপির
![তিন কারণে ছয় রাজ্যে আসন কমেছে বিজেপির](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2024-06%2F0bfb8621-7ad9-4815-a54c-c50a384caffd%2FModi.jpg?rect=56%2C0%2C3543%2C2362&auto=format%2Ccompress&fmt=webp&dpr=1.0)
এখনো বিজেপির শক্ত ঘাঁটি নয়াদিল্লি
ভারতের সাধারণ নির্বাচনে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই থেকে গেল নয়াদিল্লি। সেখানে জারি থাকল মোদির রাজত্ব। ভবিষ্যতে নয়াদিল্লিতে বিজেপি দুর্গে আঁচড় কাটতে হলে আম আদমি পার্টি (আপ) ও কংগ্রেসকে নতুন করে রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করতে হবে। গোড়া থেকে কষতে হবে হিসাব-নিকাশ।
আম আদমির শেখার আছে অনেক কিছু
চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। কেজরিওয়ালসহ দলটির অনেক নেতা এখন তিহার কারাগারে। এরই মধ্যে লোকসভা নির্বাচনে আম আদমির ফল বেশ হতাশাজনক। পাঞ্জাব, নয়াদিল্লি, গুজরাট, আসামসহ যেখানেই তারা প্রার্থী দিয়েছে—বিজেপিবিরোধী কৌশলকে কাজে লাগাতে পারেনি। কেজরিওয়াল, সঞ্জয় সিং, অতিশি—সবাই মানুষের সঙ্গে যোগাযোগে বেশ পটু। তবে বিজেপি ঝড়ের সামনে তাঁরা যেন রাজনীতির মাঠ থেকে ছিটকে পড়েছেন।
বিজেপি জোটের নীতীশ-নাইডুর সঙ্গে যোগাযোগ করছে কংগ্রেস
![বিজেপি জোটের নীতীশ-নাইডুর সঙ্গে যোগাযোগ করছে কংগ্রেস](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2024-06%2Fec4cdf33-b871-4a53-b4b4-34fe65a1f8e8%2FMallikarjun_Kharge.jpg?rect=0%2C0%2C556%2C371&auto=format%2Ccompress&fmt=webp&dpr=1.0)
রাজস্থানে কংগ্রেসের লড়াই
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা ছিল, রাজস্থানে সহজ জয় পাবে বিজেপি। রাজ্যটিতে কংগ্রেসের সামনে বহু বাধাবিপত্তি ছিল। এত কিছুর পরও সেখানে তুমুল লড়াই করেছে দলটি। বিজেপির ১৫টির বিপরীতে কংগ্রেসের আট আসনে জয় পাওয়াটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। ক্ষমতাসীন বিজেপির হাত থেকে আসন ছিনিয়ে নেওয়া সহজ কোনো কাজ নয়। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা অশোক গেহলট ও নবীন শচীন পাইলটের কাছে রাজস্থান এমন একটি রাজ্য, যেখানে নিজেদের ঘাঁটি আবার গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে তাঁদের