বাংলাদেশের র্যাবের উ সংস্কার আবারও সামনে এনেছে যুক্তরাষ্ট্র
পরে র্যাবের সংস্কার বলতে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে। এই প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিশ্চিত করা হয় এবং তা টেকসই করা হয়, সেটিও তারা জানিয়েছে। তবে তিনি এটিও উল্লেখ করেছেন, বুধবার ডেরেক শোলের সঙ্গে র্যাবের সংস্কার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি।
রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রচারিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, র্যাবকে একটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও কার্যকরী আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলেকে জানিয়েছেন, এই বাহিনী ইতিমধ্যে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তিনি র্যাবের দক্ষতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ও সহায়তা কামনা করেন।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গটি বাংলাদেশ সব আলোচনায় তুলে আসছে। এমনকি গত মাসে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সফরেও বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গটি তুলেছিল।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ডেরেক শোলের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে র্যাবের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গটি আসেনি। বরং র্যাবের দক্ষতা অর্জনের অংশ হিসেবে প্রয়োজনে বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকারের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণে যুক্ত করা যায় কি না, সেই অনুরোধ বাংলাদেশ করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বেশ কয়েক বছর ধরে মার্কিন প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছে না র্যাব। এই প্রেক্ষাপটে র্যাবের জন্য ওই প্রশিক্ষণগুলো আবার শুরু করা যায় কি না, সেই অনুরোধও বাংলাদেশ করেছে।
ডেরেক শোলের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, র্যাবের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের অনুরোধের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ ওই উপদেষ্টা।
আকসা নয়, জিসোমিয়া নিয়ে কাজ হচ্ছে
বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে আরও স্পষ্ট করে বললে আধুনিক সমরাস্ত্র কেনাকাটার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে বিশেষায়িত দুটি প্রতিরক্ষা চুক্তি আকসা ও জিসোমিয়া নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ঢাকায় ডেরেক শোলের সঙ্গে বৈঠকে ওই দুই প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রসঙ্গটি আলোচনায় এসেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জিসোমিয়া সইয়ের জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে। তবে আকসা সই করার বিষয়ে বাংলাদেশের জন্য কিছু জটিলতা আছে।প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরায় স্বাগত জানান ডেরেক শোলে।নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, অ্যাকুইজেশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট (আকসা) হচ্ছে সামরিক রসদবিষয়ক একটি রূপরেখা চুক্তি।
মূলত সামরিক রসদ সরবরাহ, এ-সংক্রান্ত নানা ধরনের সেবা আর মেরামতের বিষয় রয়েছে এই চুক্তিতে। অন্যদিকে জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) হচ্ছে মার্কিন সরকার ও সমরাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সইকারী দেশের সরকার ও সমরাস্ত্রবিষয়ক বিশেষায়িত সংস্থার মধ্যে সম্পাদিত গোপন তথ্য বিনিময়ের চুক্তি