শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র্যাব কর্মকর্তা
স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সোমবার তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিম সুলতানা ঝুমুরকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তির ফেরুয়া বাজার এলাকা থেকে ধর্ষক মফিজুল ইসলাম প্রকাশ মফুকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র্যাবের কর্মকতা।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার সংবাদ ব্রিফিং করে র্যাব-১১। কুমিল্লা ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত হন ‘নারায়ণগঞ্জ র্যাব-১১’র অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
নারকীয় এই ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে যান র্যাবের এই কর্মকর্তা। এ সময় তিনি চোখ মোছেন এবং পরে ধরা গলায় ঘটনার বর্ণনা দেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মফিজুল ইসলাম প্রকাশ মফুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ধর্ষণের ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। নিন্দার ঝড় বয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে। এরপরই র্যাব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল।
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা ঘটনার বর্ণনা দিতে আবেগতাড়িত হয়ে ধরা গলায় ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় উপস্থিত অনেক সাংবাদিককেও আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।
ধর্ষণের পর হত্যার শিকার শিশু ঝুমুর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের জাকির হোসেনের একমাত্র মেয়ে। সে স্থানীয় সোনালী শিশু বিদ্যানিকেতনের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
র্যাব-১১-এর পরিচালক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, ঘটনার দিন ২৯ এপ্রিল সকালে ঝুমুর স্কুলে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু বেলা ১১টা পর্যন্ত সে বাড়ি না ফিরলে তার মা স্কুলে যান। সেখানে মেয়ের কোনো হদিস না পেয়ে ফেরার পথে ঝুমুরের সহপাঠীর কাছে জানতে পারেন— সে স্কুল শেষে বাড়ি চলে গেছে।
তানভীর মাহমুদ বলেন, ‘বিকালে বাড়ির অদূরে ধানখেতে একটি মরদেহ পড়ে আছে বলে ঝুমুরের মা জানতে পারেন। সেখানে গিয়ে তিনি মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন।’
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন জানান, গ্রেপ্তার মফিজুল ইসলাম মফুকে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে দ্রুত রাস্তায় উঠে আসতে দেখেছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন— আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানান, নিহত ঝুমুরকে আগে থেকে চিনতেন। এই সুযোগে ২৯ এপ্রিল সকালে ঘটনাস্থলের পাশের রাস্তায় ওঁত পেতে থাকেন। ঝুমুর ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছালে মফু তাকে রাস্তার পাশের ধানি জমিতে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ঝুমুর চিৎকার করার চেষ্টা করলে মফু তার মুখ ও গলা চেপে ধরেন। এতে শিশুটি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। কোনো নড়াচড়া দেখতে না পেয়ে ভিকটিমের কানে থাকা দুল ছিড়ে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন মফু। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর চাঁদপুরে পালিয়ে যান মফু। পরে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়