প্রথম সময় ডেস্ক:
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও অর্থনীতিতে স্বস্তি দিচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স। সদ্য সমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। এর আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার। এ হিসাবে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬৫৭ কোটি ডলার বা ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ। একক অর্থবছরে এর আগে কখনও এত রেমিট্যান্স আসেনি। এক অর্থবছরে এত প্রবৃদ্ধি কখনও হয়নি। এর আগে রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির রেকর্ড ছিল ২০০১-০২ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা ২৫০ কোটি ডলার দেশে পাঠান যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩২ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি ছিল। আর সাধারণভাবে প্রতিবছর রেমিট্যান্স বাড়লেও ২০০০-০১, ২০১৩-১৪, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কমে যায়। করোনার মধ্যে রেমিট্যান্সে তেজিভাব অর্থনীতিতে স্বস্তি এনে দিয়েছে। আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম থাকলেও রেমিট্যান্সে ভর করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে গত ২৯ জুন প্রথমবারের মতো ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন বা চার হাজার ৬৪৩ কোটি ডলার। গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে রিজার্ভে যোগ হয়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২০২০ সালের মার্চ শেষে দেশের রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। সংশ্নিষ্টরা জানান, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির ফলে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ। কোনো দেশকে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ থেকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রকল্পেও ঋণ দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হলেও গতবছর করোনা শুরুর পর বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থার পূর্বাভাসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রেমিট্যান্স কমবে বলা হয়েছিল। গত বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে কমেও যায়। তবে সরকারের ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা অব্যাহত থাকা, অবৈধ চ্যানেলে প্রবাসীদের অর্থ কমে আসা, বৈধ চ্যানেলে সহজেই উপকারভোগীর হাতে রেমিট্যান্সের অর্থ পৌঁছানোর সুযোগসহ নানা কারণে পরে রেমিট্যান্স বাড়ে। গত অর্থবছর প্রতি মাসে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। অবশ্য নতুন করে শ্রমিক কম যাওয়া, জমানো অর্থ নিয়ে অনেকের দেশে একেবারেই ফেরত আসাসহ নানা কারণে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারা আগামীতে বজায় থাকবে কিনা তা নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুনে প্রবাসীরা মোট ১৯৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৮৩ কোটি ডলার। এ হিসেবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ১১ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। তবে আগের মাস মে'র তুলনায় জুনে কমেছে ২৩ কেটি ডলার বা ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। মূলত ঈদের কারণে গত মে মাসে রেমিট্যান্স অন্যান্য মাসের চেয়ে বেশি ছিল