৯ বছর আগে যেটা ছিল সবচেয়ে সুখের, সেটাই আজ অভিনেত্রীর কাছে বেশি কষ্টের

৯ বছর আগে যেটা ছিল সবচেয়ে সুখের, সেটাই আজ অভিনেত্রীর কাছে বেশি কষ্টের
৯ বছর আগে যেটা ছিল সবচেয়ে সুখের, সেটাই আজ অভিনেত্রীর কাছে বেশি কষ্টের

বিনোদন প্রতিবেদক

৯ বছর আগে যেটা ছিল সবচেয়ে সুখের, সেটাই আজ অভিনেত্রীর কাছে বেশি কষ্টের

বুঝতে শেখার বয়স থেকে ১৯ জানুয়ারি ছিল জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। দিনটির জন্য প্রতিবছর অপেক্ষা করতেন অভিনেত্রী জিনাত সানু স্বাগতা। মেতে উঠতেন আনন্দে। সেই দিন এখন বিষণ্ন করে তোলে এই অভিনেত্রীকে। ৯ বছর আগের যে দিনটি ছিল সবচেয়ে বেশি সুখের, সেই দিনটি আজ শুধুই কষ্টের। স্বাগতার বাবাকে ছাড়া দিনটি কষ্টে কেটে যায়।

১৯ জানুয়ারি অভিনেত্রী স্বাগতার জন্মদিন। দিনটি উদ্‌যাপন করতেন বাবার সঙ্গে। সবচেয়ে পছন্দের এই প্রিয় মানুষের জন্মদিন ছিল একই দিনে। এটা ছিল স্বাগতার কাছে বাড়তি পাওয়া। বলা যায় জীবনের সেরা পাওয়া। ৯ বছর আগেও দিনটির জন্য অপেক্ষা করতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই বাবা মারা যাওয়ার পরে দিনটা সেই আগের মতো স্বচ্ছন্দে কাটাতে পারেন না। জীবনের সবকিছুই যেন উল্টাপাল্টা করে দেয়।

বাবার সঙ্গে অভিনেত্রী স্বাগতা। ছবি: ফেসবুক
বাবার সঙ্গে অভিনেত্রী স্বাগতা। ছবি: ফেসবুক

স্বাগতা বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন আমার প্রিয় মানুষ। আমার জীবনের বড় অংশজুড়েই তিনি রয়েছেন। বড় হওয়ার পরে যখন বুঝতে শিখলাম আমার আর বাবার জন্মদিনটা একই দিনে, তখন আমার কাছে সবচেয়ে বেশি সৌভাগ্যের মনে হতো। কারণ, আমার পছন্দের মানুষের সঙ্গে জন্মদিন। একসঙ্গে কেক কাটা। হই–হুল্লোড় করা। তখন আমিও বাবার সঙ্গে বড় হয়ে যেতাম। এমনও হতো যে বছর ধরে অপেক্ষা করতাম বাবার সঙ্গে জন্মদিনের কেক কাটার জন্য। দিনটা ছিল বিশেষ।’

জীবন যেন থেমে থাকে না। তারপরও বন্ধু–সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটতে হয়। কিন্তু মনের কষ্টটা প্রকাশ করতে পারেন না। হাসিমুখে কেক কাটলেও সময়গুলো জুড়ে থাকে বাবা স্মৃতি। স্বাগতা বলেন, ‘জন্মদিনে কাটানো শৈশবের ঘটনাগুলোর মধ্যে এখনো বাবার কথাগুলোই মনে পড়ে।’ জানা গেল এই অভিনেত্রীর বাবা তাঁকে বেশির ভাগ সময় জীবনবোধের কথাগুলো বলতেন। সেভাবেই তাঁর বেড়ে ওঠা।

অভিনেত্রী স্বাগতা। ছবি: ফেসবুক
অভিনেত্রী স্বাগতা। ছবি: ফেসবুক

স্বাগতা সেসব কথা ভাগাভাগি করে বলেন, ‘বাবা সব সময় বলতেন মানুষের জন্য কিছুটা করে যেতে। পৃথিবী থেকে কোনো কিছুই না নিতে। কিছুটা হলেও যেন দিয়ে যাই। বাবা সব সময় নিজেকে চেনার কথা বলতেন। তাহলে জগৎ তাকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাবে। সেগুলোই মনে পড়ে। বাবার আদর্শেই আমি জীবনটাকে আমার মতো করে সাজাতে চাই। আমি হয়তো এখনো আমার কাজ দিয়ে তেমন কিছু করতে পারি নাই। কিন্তু আমি শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব কিছু করার, যার মধ্য দিয়ে হয়তো বেঁচে থাকা যায়।’

অভিনেত্রী স্বাগতা ও সংগীতশিল্পী সভ্যতার বাবা খোদা বক্স সানু ছিলেন গুণী এক সংগীতজ্ঞ। ২০১৪ সালের ১৭ অক্টোবর মারা যান তিনি।

কথার ফাঁকে স্বাগতা জানালেন, জন্মদিন এলে নাকি মনে পড়ে যায় জীবন থেকে আরও একটি বছর চলে গেল। এটা তাকে দুঃখ দেয়। ‘আমি সহজভাবে জীবনটাকে ভাবতে পছন্দ করি। আজ দুঃখ লাগল আরও একটি বছর জীবন থেকে চলে গেল। কিন্তু এই এক বছরে কী করলাম, সেটা আমাকে খুবই ভাবাচ্ছে।’—বলেন স্বাগতা।

অভিনেত্রী স্বাগতা। ছবি: প্রথম আলো

স্বাগতা আরও বলেন, ‘হয়তো জন্মদিন উপলক্ষে আমাকে পার্টি করতে হয়, রূপচর্চা করতে হয়। সবার ফোন রিসিভ করতে হয়। কেক আনলে সেটা কাটতে হয়। ছবি তুলতে হয়। অনেকেই আমাকে নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন। এগুলো আমার কাছে ভালো লাগে। কিন্তু দিন শেষে হিসাবটা মেলাই এক বছরে কী করলাম। কখনো ভুল কিছু করে থাকলে সেখান থেকে শিক্ষা নিই। নতুন কিছু করার পরিকল্পনা করি। নতুন করে একটা দম নিতে হয়। যেটা আমাকে সামনের দিকে যেতে অনুপ্রাণিত করে। আমাকে স্বপ্ন দেখায়