বাবা বেঁচে আছেন না মরে গেছেন, জানে না ৩ মেয়ে

বাবা বেঁচে আছেন না মরে গেছেন, জানে না ৩ মেয়ে
বাবা বেঁচে আছেন না মরে গেছেন, জানে না ৩ মেয়ে
কিশোরগঞ্জ প্রতিনি

ভৈরবে নৌকাডুবি

বাবা বেঁচে আছেন না মরে গেছেন, জানে না ৩ মেয়ে

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদীতে গতকাল সন্ধ্যায় বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ওই  নৌ দুর্ঘটনায় কটিয়াদীর মানিকখালী পাছপাড়া গ্রামের বেলন দে (৫০) এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। ভৈরবের আমলাপাড়ায় শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসে নৌ ভ্রমণে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। খবর পেয়ে তার তিন মেয়ে দেবী রাণী দে, সাথী রাণী দে ও শান্তা রাণী দে নদীর পাড়ে এসে আহাজারি করে কান্নাকাটি করছেন।

বাবা বেঁচে আছেন না মরে গেছেন জানে না তিন মেয়ে। এখন তাদের কী হবে! সংসারই চালাবে কে, তাদের পড়াশোনার খরচই বা যোগাবে কে! মেয়েদের কান্না যেন কিছুতেই থামছিল না। তাদের নানার বাড়ির স্বজনরাও সঙ্গে নদী পাড়ে এসেছেন। কিছু দিয়েই তাদের শান্ত করা যাচ্ছে না। সারাদিন এক ফোটা পানিও খায়নি কেউ। 

গোটা পৃথিবীটাই যেন তাদের কাছে এখন অন্ধকারের এক গোলক। তাদেরকে বিভিন্ন প্রশ্ন করলেও যেন উত্তর দেওয়ার শক্তি, মানসিকতা, কোনোটাই নেই।

তিন মেয়ের মধ্যে দেবী রাণীর বিয়ে হয়েছে। সাথী রাণী দে বাজিতপুর সরকারী কলেজে বিএ সম্মান প্রথম বর্ষে পড়ছেন। ছোট মেয়ে শান্তা এলাকার হযরত মিয়াচাঁন শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। তাদের একমাত্র ভাই অপূর্ব চন্দ্র দে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বেলন দের স্ত্রী ছবি রাণীও এসেছেন। তিনিও শোকে আহাজারি করছেন।

বেলন দে এলাকায় ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করে সংসার চালাতেন। ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার খরচও চালাতেন যোগাতেন বেলন দে।

শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকেলে ভৈরব সেতু এলাকায় মেঘনা নদীর পাড় থেকে একটি নৌকা নিয়ে ২০ জন যাত্রী আশুগঞ্জ সোনারামপুর চরে ঘুরতে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভৈরবে ফেরার পথে মাঝ নদীতে নৌকাটিকে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এত নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন ও নৌ পুলিশ ১১ জনকে উদ্ধার করে। গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে এক নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তোফাজ্জল হক (২২) নামের এক যুবককে আহতাবস্থায় ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। বাকি ৮ জন পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন