প্রথমবারের মতো মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলদস্যুরা.

প্রথমবারের মতো মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলদস্যুরা.
প্রথমবারের মতো মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলদস্যুরা.

সারোয়ার সুমন, চট্টগ্রাম

২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জিন্মি করার ৯ দিনের মাথায় আজ বুধবার প্রথমবারের মতো মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলদস্যুরা। তবে যোগাযোগের বিষয়টি স্বীকার করলেও কি বিষয়ে কথা হয়েছে বা মুক্তিপণ চেয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি মালিকপক্ষ। 

এদিকে জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রেখেছে জলদস্যুরা।

লন্ডন ও কুয়ালালামপুরভিত্তিক জল দস্যুতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরো (আইএমবি) থেকে তথ্য নিয়ে জাহাজটির এই অবস্থানের তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জাহাজটি বারবার স্থান পরিবর্তন করছে। এখন দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে আছে এটি। প্রথমে গ্যারাকাদ থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রাখা হয়েছিল। তখন উপকূল থেকে জাহাজে যেতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগত। এরপর জাহাজটির অবস্থান পরিবর্তন করে উপকূল থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নিয়ে আসে তারা। সর্বশেষ আবার অবস্থান পরিবর্তন করে জলদস্যুরা। এখন উপকূল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে আছে।’

জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ। তাদের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নোঙর করার পর বুধবার প্রথমবারের মতো আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে জলদস্যুদের। তাদের মনোনীত প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। কি কথা হয়েছে সেটা এখন বলতে পারব না। তবে নাবিকেরা সবাই সুস্থ আছেন, নিরাপদে আছেন। তাদের মুক্ত করার ব্যাপারে কাজ করছি আমরা।’

এদিকে নাবিকদের খোঁজে বারবার মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে জিম্মি থাকা নাবিকদের স্বজনরা। জাহাজটি আটক হওয়ার পরদিন প্রায় ২০ স্বজন ছুটে আসেন কেএসআরএম কার্যালয়ে। 

শুধু এমভি আবদুল্লাহ নয়; আরও অনেক জাহাজের বাংলাদেশি নাবিক ও ক্র সোমালিয়ান জলদস্যুদের কাছে অতীতে জিম্মি হয়েছিলেন। তাদের কেউ ২০ মাস পর, কেউ ১০ মাস পর জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পান। ২০১২ সালে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ২০ মাসেরও বেশি জিম্মি থাকার পর ৭ বাংলাদেশি নাবিক মুক্তি পান। ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর ভারত মহাসাগর থেকে মালয়েশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আলবেডোকে আটক করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এসময় তারা জাহাজটিতে থাকা ২২ কর্মকর্তা এবং ক্রু-কে জিম্মি করে। ২২ জনের মধ্যে ছিলেন ৭ বাংলাদেশি, ৭ পাকিস্তানি, ৬ শ্রীলংকান এবং একজন করে ভারতীয় এবং ইরানি নাগরিক। সবাই মুক্তিপণ দিয়ে দীর্ঘ সময়পর ছাড়া পান। 

কেএসআরএম গ্রুপের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মনি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় ১০০ দিন পর। জিম্মি হওয়ার আট মাস পরও সোমালীয় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার ঘটনার সাক্ষী আছেন দুই বাংলাদেশি নাবিক। তাদের একজন নাবিক জাফর ইকবাল, অন্যজন নাবিক গিয়াসউদ্দিন আজম খান। তারা আটক হওয়া এমভি মারিয়া মার্গারেট নামের জার্মান পতাকাবাহী জাহাজে কর্মরত ছিলেন