নিরাপত্তাজনিত কারণে' আসিফ, নাহিদদের হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ডিবি

নিরাপত্তাজনিত কারণে' আসিফ, নাহিদদের হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ডিবি

সোহাগ সামী:

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, নাহিদ ইসলাম ও আবু বাকের মজুমদারকে বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠার পর রাতে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে "নিরাপত্তাজনিত কারণে" তাদের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

শুক্রবার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন-অর রশীদ বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেন ওই ছাত্রনেতারা তাদের হেফাজতে রয়েছেন।

যদিও বিকেলে যোগাযোগ করা হলে মি. রশীদ বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, এ ব্যাপারে তারা কিছু জানেন না।

“সাদা পোশাকে তো যে কেউ নিতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন তিনি।

শুক্রবার বিকেলে নাহিদের বাবা বদরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, হাসপাতাল থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নাহিদের বাবা অভিযোগ জানানোর পর হাসপাতাল সূত্রেও খবরের সত্যতা মেলে।

তারা তিনজন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে জানান, একটি গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে তাদের “রিলিজ করিয়ে” নিয়ে যাওয়া হয়।

এ সংক্রান্ত আরো খবর:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি সংবাদ সম্মেলন
 ক্যাপশান,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি সংবাদ সম্মেলন (ফাইল ছবি)

তিনি জানান, বিকেল চারটার দিকে কয়েকজন লোক এসে কর্তব্যরত নার্সের কাছে নিজেদের একটি গোয়েন্দা সংস্থার লোক হিসেবে পরিচয় দেন। নিজেদের পরিচয়পত্রও দেখান।

“সিস্টারের কাছে এসে বলছে ওনাদেরকে রিলিজ দেয়ার ব্যবস্থা করেন। সিস্টার তখন বলেন, যে প্রফেসরের আন্ডারে আছে উনি না বললে তো আমি রিলিজ করতে পারি না,” যোগ করেন ওই কর্মকর্তা।

পরে সেই অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

“গুরুতর কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকায়,” সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক রিলিজের অনুমতি দেন।

রিলিজ দিতে বাধ্য বা জোর করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে হাসপাতালের কর্মকর্তা বলেন, “কিছুটা ফোর্স তো করেছেই। কারণ আমরা তো রিলিজ দেই নাই, তাদের প্রয়োজনে দিতে হয়েছে।”

বিবিসি বাংলার কথা হয় আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনের সঙ্গেও।

তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলে গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতাল থেকে আসিফ, নাহিদসহ আরেকজনকে তুলে নিয়ে গেছে।

“একবার নেয়ার পর চিকিৎসারত অবস্থায় কেন তারা আবার আটক করলো?” প্রশ্নও রাখেন তিনি।

অধ্যাপক রিলিজের অনুমতি দেন।

রিলিজ দিতে বাধ্য বা জোর করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে হাসপাতালের কর্মকর্তা বলেন, “কিছুটা ফোর্স তো করেছেই। কারণ আমরা তো রিলিজ দেই নাই, তাদের প্রয়োজনে দিতে হয়েছে।”

বিবিসি বাংলার কথা হয় আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনের সঙ্গেও।

তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলে গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতাল থেকে আসিফ, নাহিদসহ আরেকজনকে তুলে নিয়ে গেছে।

“একবার নেয়ার পর চিকিৎসারত অবস্থায় কেন তারা আবার আটক করলো?” প্রশ্নও রাখেন তিনি।

আমাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরবর্তীতে আমার উপর মানসিক ও শারীরিক টর্চার শুরু করা হয়,” যোগ করেন মি. ইসলাম।

তিনি বলেন, “এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর আমার কোন স্মৃতি নাই।”

নাহিদ ইসলাম বলেন, “রোববার ভোরে চারটা থেকে পাঁচটার দিকে পূর্বাচল এলাকায় আমার জ্ঞান ফেরে। পরে আলো ফুটলে কিছু দূর হেঁটে একটি সিএনজি নিয়ে বাসায় চলে আসি।”

এরপর তিনি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন।

আঘাতের কারণে তার দুই কাঁধ ও বাম পায়ের রক্ত জমাট বেঁধে আছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছিলেন নাহিদ ইসলাম।

ডিবি পরিচয়ে কোনো একটি 'রাষ্ট্রীয় বাহিনী' তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

যদিও মি. ইসলামের এই অভিযোগের বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান যে তাকে আটক বা ছেড়ে দেয়া সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না।

আরো পড়তে পারেন:
  • একজন আহতকে নিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীরা

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে

আগের দফায় আসিফের খোঁজ মেলে চারদিন নিখোঁজ থাকার পর।

ফিরে আসার পর আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাতে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করে আটককারীরা।

সেই বিবৃতি না পেয়ে তাকে চারদিন ধরে ‘ইনজেকশন’ প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে রাখা হয়েছিল বলে বিবিসি বাংলার কাছে দাবি করেন মি. মাহমুদ।

এর আগে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও মাহিন সরকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন তাদের চারজন সমন্বয়ক নিখোঁজ আছেন।

যে চারজন সমন্বয়কের নিখোঁজের কথা বলা হয়েছিল তারা হলেন আসিফ মাহমুদ, আব্দুল কাদের, রশিদুল ইসলাম রিফাত ও আবু বাকের মজুমদার।

তবে পরবর্তীতে একে একে সবার খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল।

তবে, এসব নিখোঁজের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ নাকচ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে আটক করেনি। বরং ছাত্র নেতারা নিজেরাই আত্মগোপনে চলে যান।

সবার নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকারের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

পাঁচটার দিকে পূর্বাচল এলাকায় আমার জ্ঞান ফেরে। পরে আলো ফুটলে কিছু দূর হেঁটে একজন আহতকে নিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীরা

ক্যাপশান,কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে

আগের দফায় আসিফের খোঁজ মেলে চারদিন নিখোঁজ থাকার পর।

ফিরে আসার পর আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাতে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করে আটককারীরা।

সেই বিবৃতি না পেয়ে তাকে চারদিন ধরে ‘ইনজেকশন’ প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে রাখা হয়েছিল বলে বিবিসি বাংলার কাছে দাবি করেন মি. মাহমুদ।

এর আগে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও মাহিন সরকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন তাদের চারজন সমন্বয়ক নিখোঁজ আছেন।

যে চারজন সমন্বয়কের নিখোঁজের কথা বলা হয়েছিল তারা হলেন আসিফ মাহমুদ, আব্দুল কাদের, রশিদুল ইসলাম রিফাত ও আবু বাকের মজুমদার।

তবে পরবর্তীতে একে একে সবার খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল।

তবে, এসব নিখোঁজের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ নাকচ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে আটক করেনি। বরং ছাত্র নেতারা নিজেরাই আত্মগোপনে চলে যান।

সবার নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকারের কথাও তুলে ধরেন তিনি।