সিইসি পদে সাবেক সচিব্দের নাম অনেক

সিইসি  পদে সাবেক সচিব্দের নাম অনেক
সিইসি  পদে সাবেক সচিব্দের নাম অনেক

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোটের একাধিক সূত্র জানায়, এবারও নাম প্রস্তাব করার বিষয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। ফলে অনেক নাম একাধিক দলের তালিকায় থাকার সম্ভাবনা আছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব নাম দিয়েছে, নতুন কমিশনের সবাই এসব প্রস্তাব থেকে আসবেন, এমনটা না–ও হতে পারে। রাষ্ট্রপতির কাছে যে চূড়ান্ত তালিকা পাঠানো হবে, সেখানে অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের বাছাই করা কিছু নামও থাকতে পারে।

যেসব দল অনুসন্ধান কমিটির কাছে নামের তালিকা দিয়েছে, এর বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক কিংবা সমমনা দল হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেও কেউ কেউ অনুসন্ধান কমিটির কাছে নাম জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগসহ বেশির ভাগ দল ১০টি করে নাম জমা দিয়েছে। কোনো কোনো দল আরও কমসংখ্যক নাম দিয়েছে বলেও জানা গেছে।

১৪ দলের সূত্র বলছে, সিইসি হিসেবে বেশ কিছু নাম আলোচনায় আছে। এর মধ্যে সাবেক কোনো জ্যেষ্ঠ সচিব নাকি বিচারপতিকে সিইসি করা উচিত, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও শরিক দলগুলো কিছুটা বিভক্ত। তবে অধিকাংশ দলের মত হচ্ছে, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা বিবেচনায় সাবেক সচিবকেই সিইসি করা দরকার। এ ক্ষেত্রে একজন জ্যেষ্ঠ সচিব এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক এক সচিবের নাম অনেক দলের তালিকাতেই আছে। তবে মন্ত্রিপরিষদের সাবেক ওই সচিবের শারীরিক অসুস্থতার কারণে আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক একজন সচিবের সম্ভাবনা বেশি দেখছেন ক্ষমতাসীন দল ও জোটের নেতারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, অনুসন্ধান কমিটিকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে তাঁর দল ১০ জনের নাম দিয়েছে। কমিটি সব তালিকা পর্যালোচনা করে যাঁদের সবচেয়ে যোগ্য মনে করবে, তাঁদেরই নিয়োগ দেবে।

রাজনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, কমিশনার হিসেবে সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, একজন বিচারক ও একজন নারী থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বেশির ভাগ দল ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছে। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ থেকে অবসরপ্রাপ্ত একাধিক বিচারপতির পাশাপাশি সাবেক জেলা জজের নামও প্রস্তাবে এসেছে। ১৪ দলের অধিকাংশ নেতার মত জেলা জজের পক্ষে। নারী নামের ক্ষেত্রে শিক্ষক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত অনেকের নাম বিভিন্ন প্রস্তাবে এসেছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন সাবেক সচিবের নামও আছে এ তালিকায়। এর বাইরে দু-একটি দল নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ও কর্মকর্তার নামও দিয়েছে প্রস্তাবে।

১৪ দলের শরিক ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা যে নাম দিয়েছেন, তা প্রকাশ না করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে তাঁদের চাওয়া হচ্ছে অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে যে চূড়ান্ত তালিকা দেবে, তা যেন প্রকাশ করা হয়।

সিইসি হিসেবে বিচারপতি বা সাবেক সচিব—কোনটির সম্ভাবনা বেশি জানতে চাইলে ইনু বলেন, দুই সংস্থার যে কেউ হতে পারেন। তবে সততা, সাহস ও কর্মজীবনে বলিষ্ঠতা প্রমাণ করেছেন, এমন কাউকেই বেছে নেওয়া উচিত।

১৪–দলীয় জোটের শরিক একটি দলের দায়িত্বশীল একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জোটের কোনো কোনো শরিক দলকে কিছু নাম দিয়ে সেগুলো প্রস্তাবে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। তবে সরকারি দলের দু-একটি শরিক এ পরামর্শ গ্রহণ করেনি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দলের প্রতি কিছুটা নাখোশ হয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা।