গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না’

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না’
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না’
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না’

ঢাকা: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনরত বিরোধী দল রাজপথ ছাড়বে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘গণতন্ত্রের পক্ষে গণস্বাক্ষর’ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ড. মঈন খান বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই- বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতি চলবে না। এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে, বন্দুকের নলের জোরে ক্ষমতায় আছে। এটা শুধু আমরা বলছি না। সারাবিশ্ব একই কথা বলছে। কাজেই আজকে এটা দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র মৃত। সুতরাং আমাদের একটি মাত্র প্রতিজ্ঞা, একটি মাত্র লক্ষ্য- আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে। যতক্ষণ না আমরা বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারব, ততক্ষণ রাজপথ ছাড়ব না।

নির্বাচনের বিরুদ্ধে নাগরিক ঐক্যের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে দেশের প্রতিটি মানুষ স্বাক্ষর করে সরকারকে আবারও প্রত্যাখ্যান করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. মঈন খান।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে ১০ কোটি ভোটার কেবল নয়, ১৭ বা ১৮ কোটি জনগণের কাছে পৌঁছাবার চেষ্টা করব। আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে অফ লাইন, অন লাইনে। আমরা মনে করি মানুষ সই করবে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো সই হয়েছে। যেরকম শাহ এএমএস কিবরিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে তার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া সাম্যের সপক্ষে নীলিমা করেছিলেন, আমরাও বলেছি- গণতন্ত্রের পক্ষে গণস্বাক্ষর।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে গণসঙ্গীত করব, গণতন্ত্রের পক্ষে গণনাটক করব, সর্বত্র, সমস্ত জায়গায় এই সরকারকে ধিক্কার জানাতে চাই। এত বড় ফোরটোয়েন্টি গর্ভমেন্ট দুনিয়ার কোথাও হয়েছে কিনা সন্দেহ। তথা কথিত ভোট ভোট খেলা, এটা এতই ন্যাক্কারজনক বিষয় যে, বাংলাদেশের শিশুরা পর্যন্ত জানে ভোটের নামে ৭ জানুয়ারি খেলা হয়েছে। কত পারসেন্ট ভোট পড়েছে? প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজেই বলতে গিয়ে দ্বিধার মধ্যে পড়ে গেছেন। তিনি বলে ফেলেছিলেন ২০ পারসেন্ট, পেছন থেকে বলে দিয়েছে ৪১ বলতে হবে।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘নির্বাচনে কত ভোট পড়েছিল, আন্তর্জাতিক মহল সেটা অনুসন্ধান করছে তাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে। ৭ জানুয়ারি যারা বাংলাদেশে ছিলেন তারা জানেন কত ভোট পড়েছে। যেখানে ভোটই হয়নি সেখানে পারসেন্টেইজ কী? একজন তো বলেছেন যে, বাংলাদেশে একজন মাত্র ভোটার তার হাতে তিনশ আসন। এই তিনশটা আসনে উনি যেখানে যাকে দেবে, তিনি সেখানে নির্বাচিত হয়ে আসবেন। এখানে আর কেউ নেই।’

তিনি বলেন, ‘গতকালও গণতন্ত্র মঞ্চ মিছিল করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে আছেন তারা নিজেরা কর্মসূচি পালন করছেন। কারও মনে করবার কারণ নাই যে, আমরা সই সংগ্রহ করছি বলে রাজপথ ছেড়ে দিয়েছি। আমরা সই সংগ্রহ করছি রাজপথের লড়াই আরও মজবুত করবার জন্য। আমরা সেইরকম লড়াই গড়ে তুলবার চেষ্টা করছি, যে লড়াইয়ের সামনে ক্ষমতাসীন দখলদার মাথানত করতে বাধ্য হবে।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘পরিস্থিতিটা কী রকম? সরকার কতখানি নাজেহাল! ডিপ্লোমেটরা যাচ্ছেন, সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন, কথা-বার্তা বলছেন, কেউ কেউ ফুল দিচ্ছেন। সেটাকে সরকার রাজনৈতিক সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করে প্রচারের ডামাঢোল তৈরি করেছেন। আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, কুটনীতিকদের এই ফুল নিয়ে যাওয়া সৌজন্য সাক্ষাৎ। এটাকে অবৈধ শাসন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নাই এবং কূটনীতিকের এই ফুল-টুল নিয়ে যাওয়াকে আরও পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স হিসেবে যদি বিবেচনা করেন বড় ধরনের ভুল করা হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, গণঅধিকার পরিষদের নেতা বাবুল বিশ্বাস, নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি একেএম আশরাফুল হকসহ অনেকে