প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পর ইজতেমা মাঠ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে
প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পর ইজতেমা মাঠ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে
জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির পর টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশের দেওয়া গণবিজ্ঞপ্তি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশের পর আজ বুধবার বেলা দুইটার পর মাঠ ছাড়তে শুরু করেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীরা। বিকেল পাঁচটার দিকে খালি হয়ে যায় প্রায় পুরো মাঠ।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের টঙ্গী জোনের উপকমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ইজতেমা মাঠে দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মহানগর পুলিশ কমিশনার মাঠে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন। এরপর পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে অবস্থান নেওয়া সাদ অনুসারী মুসল্লিদের বুঝিয়ে বললে তাঁরা মাঠ ছেড়ে দেন। এখন মাঠ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিকেল চারটার দিকে দেখা যায়, ইজতেমার মাঠে থাকা হাজারো মুসল্লি ইজতেমা মাঠ ছাড়ছেন। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে বিভিন্ন মালামাল, গাট্টিবোঁচকা। তাঁরা দল বেঁধে, সুশৃঙ্খলভাবে বের হচ্ছেন ইজতেমা মাঠের বিদেশি খিত্তা–সংলগ্ন ফটক দিয়ে। তাঁদের নিরাপদ প্রস্থানের জন্য মাঠের বাইরে কামারপাড়া-মন্নুগেট সড়কে অবস্থান করছেন সেনাসদস্য, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা।
ইজতেমা মাঠে নিহত ৪, হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সেখানে কথা হয় ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে আসা তাবলিগের এক চিল্লার সাথি মো. বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার পরই ১৩ জনের একটি দল চলে আসি। আমরা সাথিরা অবস্থান করছিলাম মাঠের পশ্চিম পারে আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। পরে রাতে অন্য সাথিদের সঙ্গে মাঠে ঢুকি। এখন আবার মুরব্বিরা চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
এর আগে পুলিশের গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বেলা দুইটা থেকে ইজতেমা মাঠে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একত্রে ঘোরাফেরা, জমায়েত বা মিছিল-সমাবেশ করতে পারবেন না। কোনো ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, ছুরি, লাঠি, বিস্ফোরক দ্রব্য বা এ–জাতীয় কোনো পদার্থ বহন করতে পারবেন না। কোনো প্রকার লাউড স্পিকার বা এ–জাতীয় কোনো যন্ত্র দ্বারা উচ্চশব্দ করতে পারবেন না। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী শুক্রবার থেকে ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় পালন করতে চেয়েছিলেন মাওলানা সাদের অনুসারী মুসল্লিরা। কিন্তু জোবায়ের অনুসারীরা তাঁদের মাঠে জোড় পালন করতে দেবেন না বলে জানান। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মাঠ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সকাল থেকেই মাঠ নিজেদের দখলে নিয়েছিলেন সাদ অনুসারীরা