গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে: তারেক রহমান

গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে: তারেক রহমান
গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে: তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে: তারেক রহমান

গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অপরিহার্য শর্ত হলো নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। 

গণতন্ত্র মানে শুধু নির্বাচন নয়, গণতন্ত্র মানে মানুষের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।

তাই শহীদ জেহাদের আত্মত্যাগের প্রেরণাকে বুকে ধারণ করেই দেশি-বিদেশি অপশক্তির চক্রান্ত প্রতিহত, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।’

শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে গতকাল বুধবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। 

১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর স্বৈরাচারবিরোধী গণ-আন্দোলনে ঢাকার পল্টনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্রদল নেতা নাজির উদ্দিন জেহাদ। তারেক রহমান বলেন, ‘শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে আমি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ ’৯০এর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একটি অবিস্মরণীয় নাম। রক্তমাখা ওই আন্দোলন ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র, মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী গণ-আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে গিয়ে শহীদ জেহাদ পুলিশের বুলেট নিজের বুকে বরণ করে নেন।

শাহাদাতবরণ করেন এই অকুতোভয় ছাত্রনেতা। তাঁর রক্ত স্রোতের ধারা বেয়েই সে বছর সংঘটিত হয় গণ-অভ্যুত্থান, পতন হয় স্বৈরশাসক এরশাদের।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল স্বৈরশাসক এরশাদ। গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর দৃঢ়-প্রত্যয় নিয়েই জেহাদ নিজের জীবন উত্সর্গ করেছিলেন। আমরা তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে না পারলে তাঁর আত্মা কষ্ট পাবে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান

আরো পড়ুন
১০ দফা দাবিতে আশুলিয়ায় শ্রমিকদের কর্মবিরতি, ৬ কারখানা বন্ধ

১০ দফা দাবিতে আশুলিয়ায় শ্রমিকদের কর্মবিরতি, ৬ কারখানা বন্ধ

 

রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মকে না মেলানোর আহ্বান জানিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আপনারা নতুন প্রজন্ম। আপনাদের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ জানাই, ধর্মকে ধর্মের জায়গায় রাখবেন। রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রের জায়গায় রাখবেন। কোনো দিন রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মকে, রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মিলাইয়েন না।

’  

তিনি বলেন, ‘সংবিধানে ২ক অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম। তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে। একই সংবিধানের ৮ নং অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র পরিচালনার যে মূলনীতি বলা আছে, তার একটি হলো জাতীয়তাবাদ, আরেকটি সমাজতন্ত্র, অন্যটি গণতন্ত্র ও অন্যটি ধর্মনিরপেক্ষতা। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে রেখে আপনি কী করে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের মূলনীতি করলেন?।’

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এই সংবিধান আগামী প্রজন্ম রাখবে কি না, সেটা নিয়ে আলাদা আলোচনা হওয়া দরকার।

তবে এই সংবিধান কি আবারও সংশোধিত হবে, নাকি নতুন করে আমরা লিখব, সেটা নিয়ে গণভোট হতে পারে।’ 

আলোচনায় আরো বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসন

খ্যাতিমান মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব (মিনার)-কে নতুন আহ্বায়ক নির্বাচিত করেছে এবি পার্টি। 

আরো পড়ুন
লতিফের ক্ষমতার নাটাই ছিল চট্টগ্রাম চেম্বারে

লতিফের ক্ষমতার নাটাই ছিল চট্টগ্রাম চেম্বার

 
গতকাল মঙ্গলবার রাতে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) জরুরী ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের  (এনইসি) এক সভার পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারকে পার্টির আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। তিনি দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং একটি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র অধ্যাপক। 

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা দলের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার মেডিক্যাল সেন্টার গুলোতে ঘুরে ঘুরে তিনি আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা তদারকি করেন। তাছাড়া দেশের যেকোন দূর্যোগ দুর্বিপাকে খাদ্য ও চিকিৎসা সাহায্য নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে চলা এই মানুষটি ইতোমধ্যে একজন সামাজিক ও মানবিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। 

আরো পড়ুন
ব্যবসায়ীদের আতঙ্কগ্রস্ত করার সুযোগ নেই

ব্যবসায়ীদের আতঙ্কগ্রস্ত করার সুযোগ নেই

 

উল্লেখ্য, এবি পার্টির আহ্বায়ক, অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে ৮ অক্টোবর ২০২৪ইং সন্ধ্যা ৬ টায় পার্টির আহ্বায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর পরপরই গণমাধ্যমে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদের আমন্ত্রণ পেয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

 

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কোন রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হতে হলে ব্যক্তির রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পরিহার করতে হয়। এবি পার্টির গঠনতন্ত্রেও কোন নেতার একইসাথে দলীয় পদ ও সরকারী দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। সরকারী পদ গ্রহণ করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দলীয় পদ ত্যাগ করতে হয়। কয়েক সপ্তাহ আগে এবি পার্টির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামও দল থেকে পদত্যাগ করেন এবং এরপর তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

 

সোলায়মান চৌধুরীর পদত্যাগের প্রেক্ষিতে নতুন আহ্বায়ক নির্বাচনের জন্য ৮ অক্টোবর রাতে দলের ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের জরুরী সভা আহ্বান করা হয়। এতে দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.)  আব্দুল ওহাব মিনারকে সর্বসম্মতিক্রমে দলের নতুন আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। 

এসময় কাউন্সিল সভায় দলের যুগ্ম আহ্বায়ক  অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক, আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কাসেম, এম হারুনুর রশীদ, বিএম নাজমুল হক, লে. কর্ণেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্ণেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার খান আজম, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানাসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

২০২০ সালের ২ মে নতুন দল হিসেবে এবি পার্টি আত্মপ্রকাশ করে। দলের সূচনালগ্নে এএফএম সোলায়মান চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও মজিবুর রহমান মঞ্জুকে সদস্যসচিব করে দলটির ২২২ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়।

বহু জল্পনা কল্পনার পর চলতি বছরের ২১ আগস্ট দলটি সরকারের নিবন্ধন লাভ করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য নতুন এই রাজনৈতিক দলটি বেশ আলোচিত হয় ও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।